তেলেনাপোতা আবিষ্কার

তেলেনাপোতা আবিষ্কার

লেখক পরিচয়

‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পটি প্রেমেন্দ্র মিত্রের (১৯০৪- ১৯৮৮) লেখা। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রোত্তর যুগের স্বনামধন্য সাহিত্যিক। তিনি একাধারে কবি, ছোটোগল্পকার এবং ঔপন্যাসিক। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল ‘প্রথমা’, ‘সম্রাট’, ‘ফেরারি ফৌজ’, ‘সাগর থেকে ফেরা’ প্রভৃতি। তিনি একাডেমী পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার সহ বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। 

তেলেনাপোতা আবিষ্কার

বিষয় সংক্ষেপ

প্রথমবার গল্পটি পড়লে একটু খটকা লাগতে পারে। খটকা লাগার কারণ, এই গল্পের বিস্তার অন্যান্য গল্পের মতো নয়। গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবটাই যেন ধোঁয়াশায় ঢাকা। আবার, গল্পের মূল চরিত্রের কী নাম সেটাও উল্লেখ নেই। এইজন্য ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে গল্পের নির্যাসটুকু তুলে ধরা হল। তবে অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে মূল গল্পটিও পড়ে নেওয়া দরকার ।এবার মূল গল্পে আসা যাক। 

কলকাতা থেকে তিনজন যুবক তেলেনাপোতা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তিনজনের মধ্যে একজন মনিদা, যার দেশের বাড়ি এই তেলেনাপোতা গ্রাম। বহুকাল আগে ম্যালেরিয়া-মহামারীতে এই গ্রামটি শ্মশানে পরিণত হয়েছিল। অনেকেই গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাস শুরু করেছিল। মনিদাও তাদের একজন। বাকি দু’জনের নাম গল্পে উল্লেখ নেই। এদের একজন গল্পের মূল চরিত্র যার নেশা মাছ ধরা এবং মনিদার মুখে তেলেনাপোতার সহজ-সরল মাছের কথা শুনে মাছ ধরার লোভে তার তেলেনাপোতায় আসা। তৃতীয়জন পানরসিক বন্ধু অর্থাৎ নেহাত মদ্যপান করাই তার উদ্দেশ্য।

শহর কলকাতা থেকে তেলেনাপোতা যাওয়ার যাত্রাপথটি লেখক সুন্দরভাবে বর্ননা দিয়েছেন। ভ্যাপসানি গরম, ঘন অন্ধকার পরিবেশ আর মশার কলরব- সব মিশিয়ে অদ্ভুত এক যাত্রাপথ। রাতের অন্ধকারে একটি গরুর গাড়ি চেপে তারা তেলেনাপোতায় উপস্থিত হয়। রাত্রির অন্ধকারে মৃত নগরীর মতো নিস্তরঙ্গ তেলেনাপোতা গ্রাম। বাকি দুজন ঘুমিয়ে পড়লেও গল্পের প্রধান চরিত্র অর্থাৎ শৌখিন-মাছশিকারী সেই বন্ধুটি ছাদে চলে যায়। সেখান থেকে তার চোখে পড়ে পাশের বাড়ির জানালায় দাঁড়িয়ে একটি নারীমূর্তি। পরদিন সকালে মাছ ধরতে গিয়ে আবার তার দেখা পাওয়া যায়- কোমলে-কঠিনে মেশানো অপুর্ব এক নারী। এদিকে অনেক চেষ্টা করেও যখন সে কোনো মাছ পেলনা তখন হতাশ হয়ে ফিরে আসে এবং জানতে পারে সেই মেয়েটির নাম যামিনী আর তাদের দুপুরের খাওয়া-দাওয়া আজ যামিনীদের বাড়িতেই হবে।

যামিনীদের বাড়িতে গিয়ে এই বন্ধুটি (অর্থাৎ গল্পের প্রধান চরিত্রটি) জানতে পারে যে নিরঞ্জন নামে এক যুবক যামিনীকে বিয়ে করার কথা দিয়ে আর ফিরে আসেনি। যামিনী সেটা মেনে নিয়েছে কিন্তু যামিনীর পঙ্গু মা এখনো এই আশায় দিন গুনে চলেছে যে নিরঞ্জন এসে যামিনীকে বিয়ে করে নিয়ে যাবে। মনিদার সঙ্গে দুজন যুবক এসেছে শুনে যামিনীর মায়ের ধারণা হয়েছে যে নিরঞ্জন ফিরে এসেছে আর তাই যামিনির মা মনিদার সাথে দেখা করতে যায়। মনিদা বুড়ির এমন আবদার শুনে বিরক্ত হয়। এমন সময় মৎস্য-শিকারি সেই বন্ধুটি আবেগবশত মনিদার সঙ্গে যায় যামিনির মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এবং সেখানে গিয়ে নিজেকে নিরঞ্জন বলে পরিচয় দেয়। যামিনির মাকে সে এই প্রতিশ্রুতিও দেয় যে সে যামিনীকে বিয়ে করবেই।

মাছ-শিকারী সেই বন্ধুটি তেলেনাপোতা থেকে ফেরার সময় নিজের মাছ ধরার সরঞ্জাম রেখে দিয়ে যায়। কদিন পরেই তো সে আবার তেলেনাপোতা এসে যামিনীকে বিয়ে করে নিয়ে যাবে- এমনটাই পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সে কলকাতায় ফিরে ম্যালেরিয়ার কবলে পড়ে। অনেকদিন পর যখন সে সুস্থ হল তখন কোথায় বা যামিনী আর কোথায় বা তেলেনাপোতা! সবই ঝাপসা স্মৃতির মতো আস্তে আস্তে মন থেকে সরে যেতে থাকে। আর যামিনী?? সবটা বুঝতে হলে গল্পটা পড়তেই হবে।

বড় প্রশ্ন (মান- ৫)

শর্ট ও এমসিকিউ

শর্ট প্রশ্ন এবং এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য টেক্সট বইটি পড়া প্রয়োজন। গল্পটি পড়া থাকলে MCQ Mock Test দিয়ে জেনে নাও কতগুলি সঠিক উত্তর দিতে পারছো।

আগের পাঠ- কর্তার ভূতপরের পাঠ- ডাকাতের মা

error: Content is protected !!