ডাকাতের মা

ডাকাতের মা

লেখক পরিচয়

বাংলা সাহিত্যের একজন প্রথিতযশা সাহিত্যিক ছিলেন সতীনাথ ভাদুড়ি (১৯০৬- ১৯৬৫)। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল ‘জাগরী’ (১৯৪৫), ‘চিত্রগুপ্তের ফাইল’ (১৯৪৯), ‘ঢোঁড়াইচরিত মানস’ (১৯৪৯) ইত্যাদি। ১৯৫০ সালে রবীন্দ্র পুরস্কার দেওয়া শুরু হলে তিনি প্রথম এই পুরস্কারে সম্মানিত হন।

উৎস

আমাদের পাঠ্য ডাকাতের মা’ গল্পটি লেখকের গল্পসংকলন ‘চকাচকী’ থেকে নেওয়া হয়েছে।

বিষয় সংক্ষেপ

সতীনাথ ভাদুড়ির একটি অনবদ্য ছোটোগল্প হল ‘ডাকাতের মা’। এখানে আলোচ্য গল্পের নির্যাসটুকু তুলে ধরা হল। এই গল্পে ডাকাতের নাম সৌখী। ডাকাতির দায়ে সে এখন জেলে। শীতকালের রাত। বাড়িতে একা সৌখির মা অর্থাৎ ডাকাতের মা।

ডাকাতের মা
ডাকাতের মা

 বিছানায় শুয়েও বুড়ির চোখে ঘুম নেই। অনেক কথা তার মাথায় ভিড় করেছে। তার ছেলে ডাকাত দলের সর্দার অথচ সে জেলে যাবার পর দলের লোক বাড়িতে পয়সা দিয়ে যায়নি। প্রায় পাঁচ বছর আগে যখন সে জেলে যায় তারপরই সৌখির একটি ছেলে হয়েছে। অভাবের দায়ে সৌখির বৌ-ছেলে এখন বৌয়ের বাপেরবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এইসব নিয়ে বুড়ি যখন চিন্তা করছিল তখন দরজায় টোকা মারার শব্দ হল। দলের লোক নাকি পুলিশ- এই ভাবনা নিয়ে যখন সে দরজা খুলল, চমকে গিয়ে দেখল যে তার ছেলে সৌখি। সাজার মেয়াদ শেষ হবার আগেই সে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। ছেলেকে পেয়ে বুড়ি আনন্দে আত্মহারা।

 এরপর সৌখি জানতে চায় তার বৌ-ছেলে কোথায়। সৌখির মা বলে যে বউ বাপের বাড়ি গেছে। কিন্তু একথা গোপন করে যায় যে তার দলের লোকেরা টাকা দিয়ে যায়নি বলে অভাবের দায়ে তারা যেতে বাধ্য হয়েছে। সৌখি মনে মনে ঠিক করে ফেলে পরদিন গিয়ে তাদের নিয়ে আসবে। মায়ের ব্যাবসার চালভাজা খেয়ে সৌখি বিছানায় শুয়ে পড়ে। কিন্তু বুড়ির এবার অন্য চিন্তা শুরু হয়।

 সৌখির মা ভাবতে থাকে তার ছেলে জেল থেকে এসেছে তাই এখন তার হাতে পয়সা নেই। সকালে উঠে যদি সৌখি ভাত খাবো বলে তো কীকরে খাওয়াবে। অনেক ভাবনার পর সে সমাধানের পথ খুঁজে পায়। রাত থাকতে বেরিয়ে পড়ে চুরি করার উদ্দেশ্যে। মাতাদিন পেশকারের বাড়ির প্রাচীর টপকে একটি জলভর্তি লোটা (ঘটি) হাতিয়ে এনে বাজারে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে সৌখির মা আলুচচ্চড়ি-ভাত রাঁধতে শুরু করে।

 এদিকে পেশকারও ছাড়বার পাত্র নয়। বাজারে গিয়ে সে নিজের লোটার সন্ধান পায়। পুলিশ ও দোকানদারকে নিয়ে হাজির হয় সৌখির বাড়ি। সৌখি তখনো বিছানায়। মায়ের সব কাণ্ডকারখানা সে কিছুই জানে না। পুলিশ দেখে সৌখির মায়ের বুক কেঁপে ওঠে। পুলিশ তাকে হেনস্থা করতে থাকে। সৌখি আর সহ্য করতে না পেরে সামনে আসে আর বলে যে সে লোটা চুরি করেছে- তার মা নয়।

 ছেলেকে ভালোবেসে রান্না করে খাওয়াবো ভেবেছিল কিন্তু নিজের অজান্তে সে ছেলের ক্ষতি করে ফেলল। যাইহোক, পুলিশ সৌখিকে নিয়ে গেল। কিন্তু ভাগ্যের এমন পরিহাস যে সৌখির মা মাত্র চোদ্দ আনা পয়সার জন্য এত কাণ্ড করে ফেলল কিন্তু সৌখির কাছেই ছিল নগদ ৯০ টাকা!যাবার আগে সৌখি মায়ের হাতে তুলে দিল তার রোজগারের সেই টাকাটা।

বড় প্রশ্ন

এমসিকিউ টেস্ট

শর্ট প্রশ্ন এবং এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য টেক্সট বইটি পড়া প্রয়োজন। গল্পটি পড়া থাকলে MCQ Mock Test দিয়ে জেনে নাও কতগুলি সঠিক উত্তর দিতে পারছো।

তেলেনাপোতা আবিষ্কার  নীলধ্বজের প্রতি জনা

error: Content is protected !!