মধ্যভারতীয় আর্যভাষা

একাদশ শ্রেণীর পাঠ্য বাংলা ভাষা বিজ্ঞানের দ্বিতীয় অধ্যায় ভারতের ভাষা পরিবার এবং বাংলা ভাষা

প্রশ্ন. মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার কালসীমা উল্লেখ করে এই স্তরের ভাষার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও৷ ৫

উত্তর- ভারতের বৃহত্তম ভাষাগোষ্ঠী হল ভারতীয় আর্য ভাষাগোষ্ঠী। আনুমানিক সাড়ে তিন হাজার বছর আগে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের একটি শাখা ভারতীয় আর্য নামে ভারতে প্রবেশ করেছিল। ভারতীয় আর্য ভাষার ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়- প্রাচীন ভারতীয় আর্য, মধ্য ভারতীয় আর্য এবং নব্য ভারতীয় আর্য। এই তিনটি যুগের মধ্যে দীর্ঘতম হল মধ্য ভারতীয় আর্য যা খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিষ্টীয় নবম শতক পর্যন্ত প্রসারিত।

মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা

মধ্য-ভারতীয় আর্য ভাষার প্রাথমিক স্তর হলো পালি ভাষা। এটি কোন বিশেষ অঞ্চলের মৌখিক ভাষা ছিল না, মার্জিত সাহিত্য রচনার ভাষা হিসাবে পালির উদ্ভব। বৌদ্ধ ধর্মের হীনযানি শাখা গৌতম বুদ্ধের বাণী পালি ভাষায় প্রচার করত।

পরবর্তী স্তরে কয়েকটি আঞ্চলিক প্রাকৃত ভাষার জন্ম হয়েছিল, যেমন- মহারাষ্ট্রী প্রাকৃত, শৌরসেনী প্রাকৃত, পৈশাচি প্রাকৃত, মাগধী প্রাকৃত এবং অর্ধমাগধী প্রাকৃত। এদের মধ্যে শৌরসেনী প্রাকৃত সবথেকে প্রাচীন, মহারাষ্ট্রীয় প্রাকৃত ভাষা আদর্শ প্রাকৃত হিসাবে সাহিত্যে ব্যবহৃত হত, পৈশাচি প্রাকৃতের কোনো সাহিত্য নিদর্শন পাওয়া যায়নি, মাগধী প্রাকৃত পূর্ব ভারতে প্রচলিত ছিল এবং অর্ধমাগধী প্রাকৃত জৈন সাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এজন্য অনেকে একে জৈন প্রাকৃত বলে থাকেন।

প্রাকৃত ভাষার পরবর্তী স্তর হল অপভ্রংশ। পন্ডিত সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে প্রতিটি প্রাকৃত ভাষার একটি করে অপভ্রংশ স্তর ছিল। অপভ্রংশের পরবর্তী স্তর হলো অবহট্ঠ। এই পর্যায়েই হল মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার শেষ স্তর।

এই অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

error: Content is protected !!