রবীন্দ্রনাথের কাব্যের যুগ বিভাগ

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস || একাদশ শ্রেণী

বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্য রচনার যুগ বিন্যাস। রবীন্দ্র কাব্যের বিভিন্ন পর্যায়। একাদশ শ্রেণির বাংলা।

প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথের কাব্যগুলির কাল অনুসারে বিভাজন করো। প্রতিটি যুগের একটি করে কাব্যের উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু একজন কবি ছিলেন না, তিনি কবিগুরু। কিশোর বয়সেই তাঁর কাব্য রচনার সূচনা ঘটে এবং আজীবন কাল তিনি কাব্য সাধনা করে গেছেন। সারাজীবন তিনি অজস্র কবিতা লিখেছেন। বর্তমান যুগের পাঠক তাঁর রচনা সম্ভার দেখে যেমন বিস্মিত হয় তেমনি মুগ্ধ হয় তাঁর রচনায় ভাবের বৈচিত্র্য দেখে। আসলে, কবি তাঁর জীবনের একেকটি পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবকে বাণীরূপ দিয়ে গেছেন। সেইজন্য তাঁর কোনো কোনো কবিতায় মর্ত্যপ্রীতি ফুটে উঠেছে, আবার কোনো কোনো কবিতা আধ্যাত্মচেতনায় উজ্জ্বল। যাইহোক, সাহিত্যের পণ্ডিতগণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনাসমূহকে আটটি পর্যায়ে (কেউ কেউ সাতটি পর্যায়ে) ভাগ করেছেন। সেগুলি হল-

১) সূচনাপর্বঃ

এই পর্বে কবির রচনায় পূর্বজ কবিদের প্রভাব স্পষ্ট। উল্লেখযোগ্য কাব্য- কবিকাহিনী, ভগ্নহৃদয়, ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী প্রভৃতি।

২) উন্মেষ পর্বঃ

এই পর্ব থেকে কবির স্বকীয়তা লক্ষণীয়। উল্লেখযোগ্য কাব্য- সন্ধ্যাসঙ্গীত, প্রভাতসঙ্গীত, ছবি ও গান প্রভৃতি।

৩) ঐশ্বর্য পর্বঃ

এই পর্বে কবি-প্রতিভার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটেছে। উল্লেখযোগ্য রচনা- মানসী, সোনার তরী প্রভৃতি।

৪) অন্তর্বর্তী পর্বঃ

মর্ত্যপ্রীতি থেকে অধ্যাত্মচেতনায় উত্তরণের অন্তর্বর্তী পর্যায় এটি। নৈবেদ্য, খেয়া প্রভৃতি এই পর্বের উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি।

৫) গীতাঞ্জলি পর্ব বা অধ্যাত্ম পর্বঃ

এই পর্বের রচনাগুলি ভগবৎপ্রেমে স্নিগ্ধ। উল্লেখযোগ্য রচনা- গীতাঞ্জলি, গীতিমাল্য, গীতালি।

৬) বলাকা পর্বঃ

এই পর্বের রচনাগুলিতে সংস্কারমুক্তি এবং গতির বাণী ধ্বনিত হয়েছে। বলাকা, পূরবী, মহুয়া প্রভৃতি এই পর্বের প্রধান রচনা।

৭) পুনশ্চ পর্বঃ

এই পর্বে কবি গদ্যছন্দের সৃষ্টি এবং পরীক্ষায় মগ্ন। উল্লেখযোগ্য কাব্য- পুনশ্চ, শ্যামলী, পত্রপুট প্রভৃতি।

৮) অন্তিমপর্বঃ

কবির জীবনের অন্তিম পর্বে রচিত হয়েছিল রোগশয্যায়, আরোগ্য প্রভৃতি কাব্যগুলি।

সাহিত্যের আধুনিক যুগঃ অন্যান্য প্রশ্নোত্তর

error: Content is protected !!