বাংলা কারকঃ অতসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

বাংলা কারকঃ অতসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর 

আলোচ্য পোস্টে বাংলা ব্যকরণের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ‘কারক-বিভক্তি-অনুসর্গ’ থেকে পঞ্চাশটি অতিসংক্ষিপ্ত (Short Answer type Question) প্রশ্নোত্তর দেওয়া হল. প্রশ্নগুলি বিগত বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং টেস্ট পেপার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিটি প্রশ্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা কারক বিভক্তি অনুসর্গ ও নির্দেশক
বাংলা কারক, বিভক্তি‌, অনুসর্গ ও নির্দেশক

প্রশ্ন- নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।

১) কারক কাকে বলে?

উত্তর- বাক্যে ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের সম্পর্ককে বলা হয় কারক।

২) কারক হল পদের …. পরিচয়। (শূন্যস্থান পূরণ করো)।

উত্তর- কারক হল পদের অম্বয়গত পরিচয়।

৩) বনে থাকে বাঘ- ‘বাঘ’ কোন কারক?

উত্তর- ‘বাঘ’ হল কর্তৃকারক।

৪) বিভক্তি কাকে বলে?

উত্তর- যেসব অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ শব্দের সঙ্গে যুক্ত শব্দকে পদে পরিণত করে, তাদেরকে বিভক্তি বলা হয়। যেমন- এ, কে, র ইত্যাদি।

৫) তির্যক বিভক্তি কাকে বলে?

উত্তর- যেসব বিভক্তি সকল কারকে প্রযুক্ত হয় তাদেরকে তির্যক বিভক্তি বলে। যেমন- এ বিভক্তি।

৬) একটি কর্তৃকারকে ‘তে’ বিভক্তির প্রয়োগ দেখাও।

উত্তর- বুলবুলিতে ধান খেয়েছে- এই বাক্যে বুলবুলি হল কর্তৃকারক এবং তার সঙ্গে তে বিভক্তির প্রয়োগ ঘটেছে।

৭) অনুসর্গ কাকে বলে?

উত্তর- যে সকল অব্যয় বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের পরে বসে এবং বিভক্তির ভূমিকা পালন করে, অর্থাৎ উক্ত পদের সঙ্গে ক্রিয়া পদের সম্পর্ক স্থাপন করে, তোদেরকে অনুসর্গ বলে।

৮) অনুসর্গ মূলত কয় প্রকার ও কী কী?

উত্তর- অনুসর্গ মূলত দুই প্রকার। যথা, শব্দজাত অনুসর্গ এবং ক্রিয়াজাত অনুসর্গ।

৯) কোন কোন কারককে অনুসর্গ প্রধান কারক বলা হয়?

উত্তর- সাধারণত করণকারক, নিমিত্তকারক এবং অপাদানকারককে অনুসর্গপ্রধান কারক বলা হয়।

১০) দুটি ক্রিয়াজাত অনুসর্গের উদাহরণ দাও।

উত্তর- লাগিয়া, বলিয়া ইত্যাদি হল ক্রিয়াজাত অনুসর্গের উদাহরণ।

১১) “হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে”- ‘জীবনে’ পদটির কারক বিভক্তি নির্ণয় কর

উত্তর- জীবনে- অধিকরণ কারক, এ বিভক্তি।

১২) “এ মায়া, পিতঃ বুঝিতে না পারি”- ‘মায়া’ পদটির কারক-বিভক্তি নির্নয় কর।

উত্তর- ‘মায়া’= কর্মকারক, শূন্য বিভক্তি।

১৩) “আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ”- ‘গিরিখাদ’ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্নয় কর।

উত্তর- গিরিখাদ= কর্মকারক, শূন্য বিভক্তি।

১৪) “ঘাস জন্মালো রাস্তায়”- ‘ঘাস’ শব্দটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- ঘাস= কর্তৃকারক, শূন্য বিভক্তি।

১৫) “আমি গ্রামের ছেলে”- ‘গ্রামের’ পদটির অম্বয়গত পরিচয় দাও।

উত্তর- ‘গ্রামের’= সম্বন্ধ পদ, এর বিভক্তি।

১৬) অনুসর্গের অপর নাম কী?

উত্তর- অনুসর্গের অপর নাম হল পরসর্গ।

১৭) কর্মপ্রবচনীয় বলতে কী বোঝ?

উত্তর- সংস্কৃত ব্যাকরণে অনুসর্গের আরেক নাম কর্মপ্রবচনীয়।

১৮) সম্বন্ধ পদ বলতে কী বোঝো?

উত্তর- বাক্যের অন্তর্গত যে নামপদ অন্য কোনো নামপদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কিন্তু ক্রিয়াপদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকে না, তাকে সম্বন্ধ পদ বলে।

১৯) সম্বোধন পদ কাকে বলে?

উত্তর- ‘সম্বোধন’ কথাটির অর্থ হল আহ্বান করা বা ডাকা। যে পদের সাহায্যে কাউকে সম্বোধন করা হয়, তাকে সম্বোধন পদ বলা হয়।

২০) সম্বোধন পদে সাধারণত কোন বিভক্তি হয়?

উত্তর- সম্বোধন পদে সাধারণত শূন্য বিভক্তি হয়।

২১) সম্বন্ধ পদে সাধারণত কোন বিভক্তি হয়?

উত্তর- সম্বন্ধ পদে সাধারণত ‘র’ বা ‘এর’ বিভক্তি হয়।

২২) অপাদান কারকে ‘তে’ বিভক্তির প্রয়োগ দেখাও।

উত্তর- অপাদান কারকে ‘তে’ বিভক্তির প্রয়োগ- ‘নদীতে জল আনতে যাবো’।

২৩) নিমিত্ত কারকে ‘কে’ বিভক্তির প্রয়োগ দেখাও।

উত্তর- নিমিত্ত কারকে ‘কে’ বিভক্তির প্রয়োগ- ‘বেলা যে পড়ে এল জলকে চল’।

২৪) অধিকরণ কারকে একইসঙ্গে ‘এ’ এবং ‘তে’ বিভক্তির প্রয়োগ দেখাও।

উত্তর- অধিকরণ কারকে একইসঙ্গে ‘এ’ এবং ‘তে’ বিভক্তির প্রয়োগ- ‘ঘরেতে ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে’।

২৫) প্রযোজ্য কর্তা বলতে কী বোঝো?

উত্তর- কর্তা যখন নিজে কাজ না করে অপরকে দিয়ে কাজ করায়, তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন- মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছে।

বিশদে পড়ো- বাংলা কারক-বিভক্তি-অনুসর্গ

২৬) প্রযোজ্য কর্তা কাকে বলে?

উত্তর- প্রযোজক কর্তা যাকে দিয়ে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে। যেমন, মাস্টারমশাই ছাত্রদের পড়াচ্ছেন।

২৭) নির্দেশক বলতে কী বোঝ?

উত্তর- যেসব বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ কোনো নামপদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তার বচন নির্দেশ করে, তাকে নির্দেশক বলে। যেমন- ছেলেটি মন দিয়ে পড়াশোনা করছে।

২৮) কর্তৃকারকে অনুসর্গের প্রয়োগ দেখাও।

উত্তর- কর্তৃকারকে অনুসর্গের প্রয়োগ- তোমার দ্বারা এ কাজ হবে না।

২৯) ব্যতিহার কর্তা বলতে কী বোঝো?

উত্তর- একাধিক কর্তার পারস্পরিক সাহচর্যে কোনো ক্রিয়া সম্পাদিত হলে তাদেরকে ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়।

৩০) নিরপেক্ষ কর্তা বলতে কী বোঝ?

উত্তর- বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়া এবং অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা আলাদা হলে, অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাকে বলা হয় নিরপেক্ষ কর্তা। যেমন, তুমি এলে আমি খুশি হব।

৩১) “আমি তাকে ছেড়ে দিলাম”- ‘তাকে’ পদটির কারক বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- তাকে= কর্মকারক, কে বিভক্তি।

৩২) “হায়! পুত্র, মায়াবী মানব সীতাপতি”- ‘পুত্র’ পদটির অম্বয়গত পরিচয় দাও।

উত্তর- পুত্র= সম্বোধন পদ, শূন্য বিভক্তি।

৩৩) সমধাতুজ কর্তা বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।

উত্তর- কোনো বাক্যের কর্তা এবং ক্রিয়া যদি একই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয়, তবে সেই কর্তাকে সমধাতুজ কর্তা বলে। যেমন, গায়ক গাইছে গান।

৩৩) সমধাতুজ কর্ম বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।

উত্তর- কোন বাক্যের কর্ম এবং ক্রিয়া যদি একই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয়, তবে সেই কর্মকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন- ছেলেরা দারুণ খেলা খেললো।

৩৪) সমধাতুজ করণ বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।

উত্তর- কোন বাক্যের ক্রিয়া এবং করণ যদি একই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয়, তবে সেই করণকে সমধাতুজ করণ বলা হয়। যেমন- যে বাঁধনে বেঁধেছ।

৩৫) সম্বোধন পদের পর কোন বিরাম চিহ্ন প্রয়োগ করা হয়।

উত্তর- সম্বোধন পদের পর পাদচ্ছেদ বা কমা (,) প্রয়োগ করা হয়।

৩৬) “গোরুকে অক্ষর খাওয়ানোও নাকি পাপ”- ‘গোরুকে’ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- ‘গোরুকে’= কর্তৃকারক (প্রযোজ্য কর্তা), কে বিভক্তি।

৩৭) “বিদ্রুপ করে ছিলে ভীষণকে, বিরূপের ছদ্মবেশে”- ‘ছদ্মবেশে’ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।

উত্তর- ‘ছদ্মবেশে’= করণকারক, এ বিভক্তি।

৩৮) কোনো বাক্যে একাধিক কর্ম থাকলে, প্রাণীবাচক কর্মটিকে কী বলা হয়?

উত্তর- প্রাণীবাচক কর্মকে গৌণ কর্ম বলা হয়।

৩৯) “বিপদে মোরে রক্ষা করো”- ‘বিপদে’ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- ‘বিপদে’= অপাদান কারক, এ বিভক্তি।

৪০) কোনো শব্দের সঙ্গে নির্দেশক যোগ করার পর বিভক্তি যোগ করার একটি দৃষ্টান্ত দাও।

উত্তর- কোনো শব্দের সঙ্গে নির্দেশক যোগ করার পর বিভক্তি যোগ করার একটি দৃষ্টান্ত হল- লোকটিকে আমি চিনি।

৪১) “ছেলেটি মামার বাড়ি যাবে”- ‘মামার’ পদটির কারক-বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- ‘মামার’= সম্বন্ধ পদ, ‘র’ বিভক্তি।

৪২) করণের বীপ্সার একটি উদাহরণ দাও।

উত্তর- করণের বীপ্সা- সে রোগে রোগে কঙ্কালসার হয়ে গেছে।

৪২) “তিনি অংকে পন্ডিত”- ‘অংকে’ পদটির কারক বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- ‘অংকে’= বিষয়াধিকরণ, এ বিভক্তি।

৪৩) সংস্কৃত ব্যাকরণের কোন কারক থেকে বাংলা নিমিত্ত কারক এসেছে?

উত্তর- সম্প্রদান কারক থেকে নিমিত্ত কারক এসেছে।

৪৪) অধিকরণ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর- অধিকরণ হল ক্রিয়ার আধার।

৪৫) “কলমে কায়স্থ চিনি…” – ‘কলমে’ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- ‘কলমে’= করণকারক, শূন্য বিভক্তি।

৪৬) ‘মহারাজ, আদেশ করুন”- ‘মহারাজ’ পদটির অম্বয়গত পরিচয় দাও।

উত্তর- মহারাজ= সম্বোধন পদ, শূন্য বিভক্তি।

৪৭) অকারক পদ বলতে কী বোঝো?

উত্তর- বাক্যের অন্তর্গত যে সকল পদ ক্রিয়াপদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত নয়, তাদেরকে অকারক পদ বলা হয়।

৪৮) অকারক পদ কটি ও কী কী?

উত্তর- অকারক পদ দুটি- ১) সম্বন্ধ পদ এবং ২) সম্বোধন পদ।

৪৯) সম্বোধন পদকে কারক বলা হয়না কেন?

উত্তর- সম্বোধন বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকে না, তাই সম্বোধন পদকে কারক বলা হয় না।

৫০) “অনেক লেখক তাদের বক্তব্য ইংরেজিতে ভাবেন”- ‘ইংরেজিতে’ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় কর।

উত্তর- ইংরেজিতে= করণ কারক, তে বিভক্তি।

পরের পাতা

error: Content is protected !!