শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য

একাদশ শ্রেণী

সাহিত্যের ইতিহাস
বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ
বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- কে, কবে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’-এর পুঁথি আবিস্কার করেন? কাব্যটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও৷ ২+৩

উত্তর- ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামের অধিবাসী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘর থেকে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ এর পুঁথিটি আবিষ্কার করেন বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্ববল্লভ।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য

কাব্য পরিচয়- শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের পুঁথিটির প্রথম এবং শেষ পাতাগুলি উদ্ধার করা যায়নি, যে কারণে এই কাব্যের রচয়িতা এবং রচনাকাল সম্পর্কে পণ্ডিতদের মধ্যে মতবিরোধ রয়ে গেছে। এমনকি কাব্যের নাম সম্পর্কেও পন্ডিতমহলে বিতর্ক রয়েছে। তবে অধিকাংশ পন্ডিতের মতে কাব্যটি বড়ু চন্ডীদাসের লেখা। কাব্যটি সম্ভবত চতুর্দশ শতাব্দীর শেষদিকে কিংবা পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমদিকে রচিত।

কাব্যের মূল চরিত্র তিনটি যথা কৃষ্ণ, রাধা এবং বড়াই। ১৩ টি খন্ডে বিভক্ত শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কথোপকথনমূলক। এই কাব্যটি সংলাপধর্মী নাটক, আখ্যানকাব্য এবং গীতিকবিতার মিশ্রণ। কৃষ্ণের জন্ম থেকে মথুরা প্রবাস পর্যন্ত কাহিনী এই কাব্যের বিষয়বস্তু।

খন্ডগুলি হল- জন্ম, তাম্বুল, দান, নৌকা, ভার, ছত্র, বৃন্দাবন, কালীয়দমন, যমুনা, হার, বাণ, বংশী ও রাধাবিরহ।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি আদিমধ্য বাংলা ভাষার একমাত্র সাহিত্যিক নিদর্শন। সেইজন্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এই কাব্যটির স্থান বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আবার, এই কাব্যটি থেকে তৎকালীন সমাজ জীবনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় পাওয়া যায়। যদিও এই কাব্যটি বৈষ্ণব সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়, তবু এই কাব্যের মাধ্যমেই বৈষ্ণব পদাবলীর রাধা চরিত্রের পূর্বাভাস লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

error: Content is protected !!