রজনী চাটুজ্জের প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা

নানা রঙের দিন 

বড় প্রশ্ন (মান-৫) 

প্রশ্ন- “… প্রাক্তন অভিনেতা রজনী চাটুজ্জের প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ।”- কে বলেছেন? এই অপমৃত্যু কীভাবে ঘটেছিল বলে বক্তা মনে করেন? ১+৪ (২০১৯)

উত্তর- অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘নানা রঙের দিন’ নাটকে পেশাদারি থিয়েটারের প্রাক্তন অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় নিজেই একথা বলেছেন।

রজনীবাবু একজন প্রতিভাবান অভিনেতা ছিলেন। অভিনয়কে ভালোবেসে পুলিশের চাকরি ছেড়ে তিনি থিয়েটারে ঢুকেছিলেন। অভিনেতা হিসেবে তিনি বেশ জনপ্রিয়ও ছিলেন। যখন তার বয়স কম ছিল তখন যেকোনো চরিত্র তিনি অনায়াসে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন এবং তার অভিনয়-স্পর্শে প্রতিটি চরিত্র নতুন আঙ্গিকে প্রকাশ পেত। এভাবেই চলে যাচ্ছিল।

এমন সময় তার জীবনে একটি মেয়ের আবির্ভাব ঘটে। জনৈক বড়লোকের সুন্দরী মেয়ে রজনীবাবুর অভিনয় দেখে তার প্রেমে পড়েছিল। কিন্তু তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতেই সে বলেছিল “তুমি ওই থিয়েটার করা ছেড়ে দাও”। রজনীবাবু মেয়েটির শর্তে রাজি হননি এবং অভিনয় করাও ছাড়েন নি, বরং এরপর থেকে থিয়েটারকেই বেশি করে আঁকড়ে ধরেছেন।

থিয়েটারকে নিজের জীবনের ধ্রুবতারা করে, অভিনয় জগতে পঁয়তাল্লিশ বছর পথচলার পর তিনি বুঝতে পারেন, বার্ধক্য তাকে গ্রাস করেছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গলার কাজ নষ্ট হয়ে গেল, অভিনয়-দক্ষতাও কমে গেল। এতদিন তিনি নিজেকে নিয়ে ভাববার অবসর পাননি, যখন পিছন ফিরে দেখলেন তখন সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। যে রজনীকান্তের ‘ট্যালেন্ট’ নিয়ে গুণীজন প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন, বয়সের ভারেই সেই ‘প্রতিভার অপমৃত্যু’ ঘটেছিল।

error: Content is protected !!