একনজরে– মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি অসামান্য ছোটোগল্প হল ‘নদীর বিদ্রোহ’। গল্পটি লেখকের ‘সরীসৃপ‘ (১৯৩৯) গল্প সংকলন থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে নদীর বিদ্রোহ গল্প থেকে গুরুত্বপূর্ণ বড় প্রশ্ন এবং অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
Nadir Bidroha by Manik Bandyopadhyay
Nadir Bidroha is a Bengali short story written by Manik Bandyopadhyay. It is included in the syllabus of West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) Class Ten Bengali (first language). For short and long question from this story, read this post carefully.
নদীর বিদ্রোহ
পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের দশম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী মোট পাঁচটি গল্প থেকে তিনটি ১ নম্বরের বহু বিকল্পীয় প্রশ্ন, চারটি ১ নম্বরের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, একটি ৩ নম্বরের সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং একটি ৫ নম্বরের রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। এখানে নদীর বিদ্রোহ গল্প থেকে গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
নদীর বিদ্রোহঃ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১. ‘আমি চললাম হে!’ – নদেরচাঁদ কখন একথা বলেছিল?
উত্তর– চারটা পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে রওনা করিয়ে দিয়ে নদেরচাঁদ একথা বলেছিল।
২. নদেরচাঁদ লাইন ধরে কত মাইল হেঁটেছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদের লাইন ধরে এক মাইল হেঁটেছিল।
৩. কী না করলে নদেরচাঁদ আর বাঁচবে না?
উত্তর– ব্রিজের একপাশে চুপচাপ বসে কিছুক্ষণ নদীকে না দেখলে সে আর বাঁচবে না।
৪. ‘নদীর জন্য এমনভাবে পাগল হওয়া কি তার সাজে?’- এই প্রশ্ন কেন?
উত্তর– কারণ তার বয়স ত্রিশ বছর এবং সে একটা স্টেশনের স্টেশনমাস্টার।।
৫. নদীকে ভালােবাসার কী কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিয়েছিল?
উত্তর– নদীকে ভালােবাসার জন্য নদেরচাঁদের কৈফিয়ত ছিল এটাই যে, সে নদীর ধারে জন্মেছে, বড়ো হয়েছে এবং চিরকাল নদীকে সে ভালোবেসেছে।
৬. ‘সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল;’ – কী দেখে সে কেঁদেছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদের দেশের বাড়িতে ক্ষীণস্রোতা নদীটি একবছর অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে গিয়েছিল বলে সে কেঁদেছিল।
৭. ‘নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল।’ – কেন সে স্তম্ভিত হয়েছিল?
উত্তর– ব্রিজের কাছে এসে প্রথমবার নদীর দিকে তাকাতেই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়েছিল।
৮. ‘আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে।’– নদীর এমন অবস্থার কারণ কী?
উত্তর– নদীর জলধারাকে বেঁধে রাখার উদ্দেশ্যে যে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল, তারই প্রতিবাদে নদী খেপে উঠেছিল।
৯. চেনা নদীকে নদেরচাঁদের আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত মনে হয়েছিল কেন?
উত্তর– নদীর পঙ্কিল জল ফুলে ফেঁপে উঠেছিল বলেই চেনা নদীকে নদেরচাঁদের অপরিচিত ও ভয়ংকর মনে হচ্ছিল।
১০. ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল।– কোন্ স্থানে সে গিয়ে বসেছিল?
উত্তর– সে অর্থাৎ নদেরচাঁদ ব্রিজের মাঝামাঝি ইট-সুরকি আর সিমেন্টের গাঁথা ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে গিয়ে বসেছিল।
১১. ‘নদেরচাঁদের ভারী আমােদ বােধ হইতে লাগিল। – কী দেখে তার আমােদ হয়েছিল?
উত্তর– নদীর জল এতোটা উপরে উঠে এসেছিল যে হাত বাড়ালেই নাগাল পাওয়া যেত। সেটা দেখেই নদেরচাঁদের আমোদ হয়েছিল।
১২. ‘নদীর সঙ্গে খেলা করার লােভটা সে সামলাইতে পারিল না’ – কীভাবে সে নদীর সঙ্গে খেলা করেছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা চিঠির এক-একটি পাতা ছিঁড়ে দুমড়ে-মুচড়ে জলে ফেলছিল। এইভাবে সে নদীর সঙ্গে খেলা করছিল।
১৩. ‘এই ভীষণ মধুর শব্দ শুনিতে শুনিতে সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হইয়া আসিতেছে।’ – কোন্ শব্দ শুনে শরীর অবশ ও অবসন্ন হয়েছিল?
উত্তর– নদীর জলের অশ্রুতপূর্ব শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ মিশে যে সংগত তৈরি হয়েছিল সেই শব্দ শুনে নদেরচাঁদের শরীর অবশ ও অবসন্ন হয়েছিল।
১৪. ‘কিছুক্ষণের জন্য নদেরচাঁদকে দিশেহারা করিয়া রাখিল’- কিছুক্ষণের জন্য কী তাকে দিশেহারা করে রেখেছিল?
উত্তর– ব্রিজের উপর দিয়ে একটা ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দে হঠাৎ নিদ্রাভঙ্গ হওয়ার মতো একটা বেদনাদায়ক চেতনা তাকে দিশেহারা করে রেখেছিল।
১৫. ‘নদী এমনভাবে খেপিয়া যাইতে পারে…’ – নদী খেপে গিয়েছিল কেন?
উত্তর– মানুষ নদীর উপর ব্রিজ তৈরি করে নদীর জলস্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিল। তাই নদী খেপে গিয়েছিল।
১৬. ‘কিন্তু পারিবে কি?’ – কী পারার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর– ব্রিজটা ভাসিয়ে এবং দুপাশে মানুষের তৈরি বাঁধ ভেঙে ফেলে নদীর নিজের গতিপথ করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
১৭. “মানুষ কি তাকে রেহাই দিবে?”- কেন এই উক্তি?
উত্তর– নদী যদি একবার মানুষের তৈরি ব্রিজ এবং বাঁধ ভেঙে ফেলে, তারপরও মানুষ আবার সেইসব নতুন করে গড়ে ফেলবে। তাই একথা বলা হয়েছে।
১৭. ‘আজ তার মনে হইল কী প্রয়ােজন ছিল ব্রিজের?’ – কেন এমন মনে হয়েছিল?
উত্তর– ব্রিজ তৈরি করার ফলে নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল। তাই নদেরচাঁদের এমন মনে হয়েছিল।
১৮. নদেরচাঁদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদ রেললাইন ধরে অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিল। এমন সময় পিছন থেকে সাত নম্বর ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি তাকে পিষে দিয়ে চলে যায়।
১৯. ‘এক একখানা পাতা ছিড়িয়া দুমড়াইয়া মােচড়াইয়া জলে ফেলিয়া দিতে লাগিল।’ – উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের পাতা জলে ফেলতে লাগল?
উত্তর– উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা পাঁচপাতার চিঠি থেকে এক-একটা পাতা জলে ফেলতে লাগল।
২০. নদেরচাঁদ কতদিন যাবৎ স্টেশনমাস্টারের চাকরি করছিল?
উত্তর– চার বছর ধরে নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের চাকরি করছিল।
নদীর বিদ্রোহঃ সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্ন
প্রশ্ন- “নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।”- কে বুঝতে পেরেছে? নদীর বিদ্রোহ বলতে সে কী বােঝাতে চেয়েছে? ১+২ [মাধ্যমিক ২০১৭]
প্রশ্ন- “নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভােগ করে।”- কার কথা বলা হয়েছে? তার ‘পাগলামিটি’ কী ? ১+২ [মাধ্যমিক ২০১৯]
প্রশ্ন- “এমন ভাবে পাগল হওয়া কি তার সাজে?”- কার কথা বলা হয়েছে? একথা বলার কারণ কী? ১+২
প্রশ্ন- “দুরারােগ্য ব্যাধিতে ভুগিতে ভুগিতে পরমাত্মীয়া মরিয়া যাওয়ার উপক্রম করিলে মানুষ যেমন কাঁদে।” – কী দেখে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি এমনভাবে কেঁদেছিল? এ থেকে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে কোন ধারণা পাওয়া যায়? ১+২
প্রশ্ন- “নদেরচাঁদের ভারী আমােদ বােধ হইতে লাগিল।” – নদেরচাঁদ কে? তার আমােদের কারণ কী? ১+২
প্রশ্ন- “মানুষ কি তাকে রেহাই দিবে?”- কার কথা বলা হয়েছে? কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি? ১+২
প্রশ্ন- “আজ তার মনে হইল কী প্রয়ােজন ছিল ব্রিজের?”– কার মনে হয়েছিল? বক্তার এরূপ মনে হওয়ার কারণ কী? ১+২
প্রশ্ন- “নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।” – সে কে? নদীর বিদ্রোহের কারণ কী? ১+২
নদীর বিদ্রোহঃ রচনাধর্মী প্রশ্ন
প্রশ্ন- ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প অবলম্বনে নদীর প্রতি নদেরচাঁদের অকৃত্রিম ভালবাসার পরিচয় দাও। [মাধ্যমিক ২০১৯]
প্রশ্ন- “ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য … এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক।” নদীর জন্য কার মায়া? তা অস্বাভাবিক কেন? এই অস্বাভাবিকতার পরিণতি কী হয়েছিল? ১+২+২
প্রশ্ন- ‘নদীর বিদ্রোহ’ – গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।