ভুরিভোজনটা অন্যায় কিন্তু না খেয়ে…

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা

কে বাঁচায় কে বাঁচে

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- “ভুরিভোজনটা অন্যায়, কিন্তু না খেয়ে মরাটা উচিত নয় ভাই।” বক্তা কে? এই বক্তব্যের মধ্যে বক্তা চরিত্রের কোন দিকটি অভাসিত হয়েছে? ১+৪ (উঃ মাঃ ২০১৯)

উত্তর- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী ও বন্ধু নিখিল এই কথা বলেছিল।

নিখিলের এই বক্তব্য থেকে তার চরিত্রের বাস্তববাদী দিকটি আভাসিত হয়েছে। মন্বন্তরের সময় বহুু মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছিল। তখন অনাহারে মৃত্যুর ব্যাপারটা নিতান্তই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু আদর্শবাদী মৃত্যুঞ্জয়ের পক্ষে না খেতে পেয়ে মৃত্যুর দৃশ্য সহ্য করা সহজসাধ্য ছিল না। সেইজন্য মাইনের দিন তার বেতনের সমস্ত টাকাটা সে নিখিলের হাতে তুলে দিয়েছিল এবং বলেছিল কোনো রিলিফ ফান্ডে সেটা দিয়ে দিতে। অর্থাৎ, অন্যকে বাঁচানোর জন্য নিজেকে মেরে ফেলার আয়োজন করেছিল সে। নিখিল তাকে এই বাস্তব ব্যাপারটা বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে এইভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যাবে না।

প্রতিটি মানুষেরই বেঁচে থাকার জন্য খাবারের প্রয়োজন। দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষগুলোকে বাঁচাতে হলে যেমন খাবারের প্রয়োজন, তেমনি মৃত্যুঞ্জয়ের নিজের বেঁচে থাকার জন্যও খাবার প্রয়োজন। দুর্ভিক্ষের সময় ভুরিভোজন করাটা উচিত নয়, সেটা কাম্যও নয়। কিন্তু নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যেটুকু খাবার দরকার সেটুকু খেতেই হবে। উপায় থাকতেও নিজেকে না খাইয়ে মারা অন্যায়। আদর্শবাদী মৃত্যুঞ্জয়ের বিপরীত প্রান্তে দাঁড়িয়ে নিখিলের এই বাস্তববোধ চরিত্রটিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

error: Content is protected !!