মহাপঞ্চকের সঙ্গে আচার্য অদীনপূণ্যের বিরোধ

একাদশ শ্রেণী

নাটক গুরু
বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন. মহাপঞ্চকের সঙ্গে আচার্য অদীনপূণ্যের বিরোধ বাঁধল কেন? কে, কোথায় অদীনপূণ্যকে নির্বাসন দিলেন? ৩+১+১

উত্তর- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গুরু’ নাটকের পটভূমি হলো অচলায়তন নামক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের আচার্য হলেন অদীনপূণ্য। মহাপঞ্চক হল অচলায়তনের অন্যতম একজন পন্ডিত। একটা সময় দেখা যায় মহাপঞ্চকের সঙ্গে আচার্য অদীনপুণ্যের বিরোধ বাঁধে। এই বিরোধিতার অনিবার্য ফল হিসাবে আচার্য অদীনপুণ্যকে অচলায়তন থেকে বিতাড়িত করা হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গুরু
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গুরু

আচার্য অদীনপুণ্যের সঙ্গে মহাপঞ্চকের বিরোধিতার সূত্রপাত হয়েছিল একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সুভদ্র নামক একজন বালক অচলায়তনের উত্তর দিকের জানালা খুলে আয়তনের নিয়ম ভঙ্গ করেছিল। এর শাস্তি হিসেবে তাকে মহাতামস ব্রত পালন করতে হত। কিন্তু এই ব্রত উদযাপন করা সুভদ্রের মতো একজন নিতান্ত বালকের পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। এইজন্য আচার্য অদীনপুণ্য সিদ্ধান্ত নেন যে সুভদ্রকে মহাতামস ব্রত পালন করতে হবে না। এর ফলে আচার্যের সঙ্গে মহাপঞ্চকের নেতৃত্বে অন্যান্য অচলায়তনিকদের সংঘাত শুরু হয়ে যায়।

অচলায়তনে তুচ্ছ জীবনের তুলনায় নিয়মনিষ্ঠার গুরুত্ব অনেক বেশি। আচার্য অদীনপুণ্য নিজেও এতদিন এই শিক্ষাই দিয়ে এসেছেন। এখন তার মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে এবং সেইজন্য সুভদ্রের ভুল তিনি অনায়াসে ক্ষমা করতে পেরেছেন। কিন্তু আচার্যের হৃদয় বিগলিত হলেও তারই শিক্ষায় শিক্ষিত মহাপঞ্চক সনাতন শাস্ত্রবিধিকেই প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আচার্য অদীনপুণ্য শাস্ত্রাচার পালনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে মহাপঞ্চকের সঙ্গে তার বিরোধ বেঁধেছিল।

আচার্য অদীনপুণ্যকে মহাপঞ্চক দর্ভকপল্লীতে নির্বসন দিয়েছিল।

error: Content is protected !!