একটু উৎপাত হলে যে বাঁচি

গুরু

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- “একটু উৎপাত হলে যে বাঁচি”- কে বলেছে? কোন উৎপাত? সে উৎপাত চায় কেন?

উত্তর- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুরু নাটকের দ্বিতীয় দৃশ্যে পাহাড় মাঠে আগত পঞ্চক দাদাঠাকুরকে একথা বলেছিল।

দাদাঠাকুরের সঙ্গে কথোপকথন প্রসঙ্গে পঞ্চক জানায় যে তাদের অচলায়তনে গুরু আসতে চলেছেন। তখন দাদাঠাকুর বলেন “ভারি উৎপাত করবে তাহলে তো”। পঞ্চক বলেছিল “একটু উৎপাত হলে যে বাঁচি”। অর্থাৎ, গুরু অচলায়তনে এলে যে উপদ্রব হবে সেই কথাই এখানে বলা হয়েছে।

‘গুরু’ নাটকের এক ব্যতিক্রমী চরিত্র হলো পঞ্চক। সে যুক্তিবাদী মনের অধিকারী। তাই অচলায়তনের আচারসর্বস্ব জীবনযাপন তার স্বভাববিরুদ্ধ। অচলায়তনের অন্যান্য আবাসিকেরা সনাতন ধর্মবিধি মেনে নিশ্চিন্তে দিনযাপন করতে পারে কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে পঞ্চকের প্রাণ হাঁফিয়ে ওঠে। সে চোখ বন্ধ করে কোনো কিছু মেনে নিতে অপারগ। যাকিছু সত্য বলে প্রচলিত সেসব নিজে পরখ করে দেখে নিতে চায় সে। আর এইভাবে একের পর এক অনাচার করে সে নিজে উপলব্ধি করেছে যে অচলায়তনে প্রচলিত বেশিরভাগ রীতিনীতি অমূলক।

কিন্তু এতসব করেও তার মনে কোথায় যেন একটা দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে। হাজার বছর ধরে প্রচলিত সংস্কার, সনাতন ধর্মবিধি তার একার পক্ষে ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়। সেইজন্য সে গুরুর আসার অপেক্ষায় রয়েছে। পঞ্চক মনেপ্রাণে চায় একটা কিছু উৎপাত হোক, কারণ অচলায়তনের বদ্ধ পরিবেশে তার প্রাণ হাঁপিয়ে উঠেছিল।

error: Content is protected !!