বৃন্দাবনদাসের চৈতন্যভাগবত

একাদশ শ্রেণি

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- কাকে চৈতন্য লীলার ব্যাস বলা হয়? তাঁর কাব্যটির পরিচয় দাও। (১+৪)

বাংলায় চৈতন্য জীবনী সাহিত্য

উত্তর- বৃন্দাবন দাসকে ‘চৈতন্য লীলার ব্যাস’ বলা হয়। ব্যাসদেব রচিত ‘ভাগবত’-এর অনুসরণে তিনি চৈতন্যলীলার বর্ণনা করেছেন, এইজন্য তাঁকে ‘চৈতন্য লীলার ব্যাস’ আখ্যা দেওয়া হয়।

বৃন্দাবন দাসের গ্রন্থটির নাম ‘চৈতন্যভাগবত’। এটিই বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম চৈতন্যজীবনী সাহিত্য। কাব্যটির প্রথমে নাম ছিল ‘চৈতন্যমঙ্গল’। কবি তাঁর মায়ের নির্দেশে এই নাম পরিবর্তন করে ‘চৈতন্যভাগবত’ রেখেছিলেন। আবার অনেকের মতে, ‘চৈতন্যভাগবত’ নামটি বৃন্দাবনের গোস্বামীদের দেওয়া।

‘চৈতন্যভাগবত’ গ্রন্থটি তিনটি খন্ডে বিভক্ত। আদি খন্ডে পনেরটি অধ্যায়। এই অংশে চৈতন্যের জন্ম থেকে গয়া গমন পর্যন্ত ঘটনার বর্ননা রয়েছে। মধ্য খন্ডে ছাব্বিশটি অধ্যায়ে চৈতন্যদেবের সন্ন্যাসধর্ম গ্রহণ বিধৃত হয়েছে। অন্ত্যখন্ডে শ্রীচৈতন্যদেবের নীলাচলগমণ এবং সমসাময়িক কিছু ঘটনার আংশিক বিবরণ রয়েছে। এই খন্ডটি অসম্পূর্ণ।

বৃন্দাবন দাস ছিলেন একজন পরমভক্ত বৈষ্ণব। তিনি চৈতন্য-নিত্যানন্দকে কৃষ্ণ-বলরামের অবতার হিসেবে মনে করতেন। তাঁর কাব্যে মাঝেমাঝেই অলৌকিক প্রসঙ্গের উত্থাপন লক্ষ্য করা যায়। তবে, যে কারণে এই গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে, তা হল কবির ইতিহাসবোধ এবং তথ্যনিষ্ঠতা। ‘চৈতন্যভাগবত’ গ্রন্থ থেকে সমকালীন সমাজজীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়।

error: Content is protected !!