বাদার ভাত খেলে তো আসল বাদাটা..

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা

মহাশ্বেতা দেবীর গল্প ‘ভাত’

বড় প্রশ্ন (মান ৫)

প্রশ্ন- “বাদার ভাত খেলে তো আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন৷” ‘বাদা’ কাকে বলে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এই রকম মনে হওয়ার কারণ কী? ১+৪ (২০১৬)

উত্তর- মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে আমরা দেখতে পাই যে বাসিনীর মনিব বাড়ির এত প্রতিপত্তির কারণ হলো বাদা অঞ্চলের জমি। ‘বাদা’ বলতে বোঝায় বিস্তীর্ণ জলাভূমি। আবার, বাদা বলতে অকর্ষিত জঙ্গলময় জমিকেও বোঝায়।

কলকাতায় বাসিনীর মনিববাড়ি বেশ অবস্থাপন্ন, একথা গ্রামের সকলেই জানত। সেখানে গিয়ে উচ্ছব জানতে পারে যে, তাদের এত প্রাচুর্যের মূলে রয়েছে বাদা অঞ্চলের জমি। তাদের বাড়িতে প্রতিদিন পাঁচ ভাগে ভাত হয়। সকলের জন্য আলাদা আলাদা চাল। তাছাড়া বুড়োকর্তার দীর্ঘায়ু কামনা করে যে হোমযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানেও এত রাজকীয় আয়োজন ছিল যে আশ্চর্য হবারই কথা। উচ্ছবদেরও তো বাদা অঞ্চলেই ঘর। সেই বাদায় ‘গুগলি-গেঁড়ি-কচুশাক-সুশনো শাক’ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়না। এইজন্য উচ্ছব স্বচক্ষে দেখতে চায় সেই বাদাটা কেমন।

কিন্তু দীর্ঘদিন অভুক্ত থাকার ফলে উচ্ছবের শরীরে ক্ষমতা নেই। সে ঠিক করে আগে পেট ভরে ভাত খাবে, তারপর সেই বাদার জমিটা দেখে আসবে। বাসিনীর মনিব বাড়িতে সে যজ্ঞের কাঠ কাটার কাজে নিযুক্ত হয়েছিল। যজ্ঞ হলে ভাত খেতে পেত উচ্ছব। কিন্তু বাড়ির কর্তা মারা যায় এবং বিধান অনুযায়ী সব ভাত ফেলে দিতে বলা হয়। উচ্ছব ভাতের ডেকচি নিয়ে ছুট দেয় এবং স্টেশনে গিয়ে মুঠো মুঠো ভাত খায়। বাদার চালের ভাত খেয়ে গায়ে জোর পেলে তবেই তো সে প্রকৃত বাদাটার সন্ধান করতে পারবে।

error: Content is protected !!