হাতিবেগার সম্পর্কে আলোচনা কর।

আমার বাংলা

গারো পাহাড়ের নীচে

প্রশ্ন- ‘হাতিবেগার’ কী? কীভাবে এটি বন্ধ হয়েছিল? (৩+২)

উত্তর- সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের ‘গারো পাহাড়ের নীচে’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে ‘হাতিবেগার’ নামক একটি অমানবিক আইনের পরিচয় পাওয়া যায়।

আমার বাংলা হাতিবেগার
হাতিবেগার

মাঝে মাঝে জমিদারের শখ হত হাতি ধরার। কিন্তু হাতি তো তার প্রজা নয় যে সহজেই ধরা দেবে। জমিদারের শখ পূরণ করার জন্য প্রত্যেক গ্রাম থেকে প্রজাদেরকে আসতে হত। এই কাজের জন্য তারা জমিদারের কাছে কোনো মজুরি তো পেতই না, এমনকি নিজেদের খাবার ব্যবস্থাও নিজেদেরকেই করতে হত। যে জঙ্গলে হাতি থাকতো সেই জঙ্গলটিকে প্রজারা বেড় দিয়ে ঘিরে থাকতো। আর হাতি ধরার শখ যার, সেই জমিদার সেপাইসন্ত্রী নিয়ে বসে থাকতেন পাহাড়ের উপর উঁচু মাচাতে। এদিকে হাতি ধরতে গিয়ে কোনো প্রজা মরতো সাপের কামড়ে কেউবা যেতো বাঘের পেটে।

কিন্তু সাধারণ মানুষ এই অত্যাচার বেশিদিন সহ্য করেনি। গোরাচাঁদ মাস্টারের নেতৃত্বে প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। কামারশালায় তৈরি মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা জমিদারের পল্টনের সঙ্গে লড়াই করেছিল। জমিদারের লোকবলের কাছে প্রজাদের পরাজয় ঘটলেও হাতিবেগার আইন চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

error: Content is protected !!