তেলেনাপোতা আবিষ্কার
একাদশ শ্রেণীর পাঠ্য প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা ‘তেলনাপোতা আবিষ্কার’ গল্প থেকে গুরুত্বপূর্ণ বড় প্রশ্নের উত্তর- একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য। [Telenapota Aviskar by Premendra Mitra, Bengali short story of class 11, wbbchse]
প্রশ্নঃ তেলেনাপোতা আবিষ্কার কি আসলে আধুনিকতার মোড়কে শকুন্তলা-কাহিনি ?
উত্তর– প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে প্রধান নারী চরিত্রটি হল যামিনী। তার করুণ জীবনবৃত্তান্ত আমাদের শকুন্তলার কথা মনে করিয়ে দেয়।
শকুন্তলা বৃত্তান্ত
মহাভারতের আদিপর্বে শকুন্তলা আখ্যানটি রয়েছে। মহর্ষি কণ্বের পালিতা কন্যা শকুন্তলা। রাজা দুষ্মন্তের সঙ্গে তার গান্ধর্বমতে বিবাহ হয়েছিল। বিবাহের পর রাজা দুষ্মন্ত রাজধানিতে ফিরে যান। যাবার সময় তিনি শকুন্তলাকে কথা দিয়ে গিয়েছিলেন যে শীঘ্রই ফিরে এসে তিনি শকুন্তলাকে নিয়ে যাবেন। শকুন্তলা দুষ্মন্তের জন্য প্রহর গুনতে থাকে কিন্তু দুষ্মন্ত আর ফিরে আসেন নি। এদিকে, স্বামী বিরহে কাতর শকুন্তলাকে অহংকারী মনে করে ঋষি দুর্বাশা অভিশাপ দেন যে যার চিন্তায় সে মগ্ন সেই তাকে চিনতে পারবে না। যাইহোক, বাবার সঙ্গে শকুন্তলা স্বামীর কাছে হাজির হয়। কিন্তু দুষ্মন্ত তাকে চিনতে পারেন নি। ভাগ্যাহত শকুন্তলা এরপর এক তপোবনে থাকতে শুরু করে।
যামিনী চরিত্রে শকুন্তলার ছায়া
তেলেনাপোতার অভিশপ্ত জীবনে পঙ্গু মায়ের সেবা করে দিন কাটায় যামিনী। নিরঞ্জন নামে একজনের সঙ্গে তার বিয়ে হবার কথা ছিল। নিরঞ্জন কথা রাখেনি। তারপর তার শুন্য জীবনে আসে আরেকজন- যাকে গল্পে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। যামিনীর জ্ঞাতিস্থানীয় মণিদার সঙ্গে সে তেলেনাপোতায় এসেছিল মাছ ধরার জন্য। যামিনীর দুঃখের কাহিনি শুনে, আবেগের বশে সে যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। যামিনীর নিস্তরঙ্গ জীবনে ঢেউ তুলে সে শহরে ফিরে যায়। কিন্তু শহরে ফিরে যাবার পর তার মন থেকে যামিনীর স্মৃতি ম্লান হতে থাকে। এমন সময় দুর্বাশার অভিশাপের মতো ম্যালেরিয়ার জীবাণু তাকে গ্রাস করে। দীর্ঘদিন রোগভোগের পর যামিনীর মুখচ্ছবি তার মন থেকে একেবারে মুছে যায়। ওদিকে তেলেনিপোতার মৃত্যুর তপোবনে তখনো পথ চেয়ে বসে থাকে যামিনী।
এই গল্প থেকে অন্যান্য প্রশ্নঃ