গালিলিও|| সত্যেন্দ্রনাথ বসু
বিশিষ্ট বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর লেখা গালিলিও প্রবন্ধ থেকে বড় প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্নঃ ক্যাথলিক খ্রিস্টান যাজকদের সঙ্গে গালিলিওর বিরোধের কারণ কী? গালিলিওর জীবনের শেষ ন’বছর যে অবস্থায় কেটেছিল তার বিবরণ দাও।” (WBCHSE Class 11 Bengali Prose Galilo Descriptive Question and Answer)
প্রশ্নঃ ক্যাথলিক খ্রিস্টান যাজকদের সঙ্গে গালিলিওর বিরোধের কারণ কী? গালিলিওর জীবনের শেষ ন’বছর যে অবস্থায় কেটেছিল তার বিবরণ দাও। ২+৩
উত্তর- সত্যেন্দ্রনাথ বসুর গালিলিও প্রবন্ধে বিগত সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ জ্যোতির্বিজ্ঞানী গালিলিওর জীবনের অনেক কথাই জানা যায়। তিনি যে সময় বর্তমান ছিলেন সে সময়টা ছিল ধর্মীয় আধিপত্যের যুগ। তখনকার দিনে ধর্মীয় যাজকেরা বাইবেলের লেখা প্রচার করতেন। যুক্তিনিষ্ঠ বিজ্ঞানী গালিলিও বাইবেলের সব কথা চোখ বন্ধ করে মেনে নিতে পারেননি। তার অধ্যাপনা এবং লেখালেখি অনেক সময়ই বাইবেলের অনুরূপ ছিল না। সেই জন্য তিনি ক্যাথলিক খ্রিস্টান যাজকদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন।
নিজের দূরবীন নিয়ে গালিলিও যেসকল মহাজাগতিক বিষয় আবিষ্কার করেছিলেন সেগুলি কোনোটি বাইবেলে উল্লেখ ছিল না। সর্বোপরি, কোপার্নিকাসের বিশ্ববিন্যাসের স্বপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে গালিলিও ‘ধর্মবিদ্বেষী’ আখ্যা পেয়েছিলেন।
ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে গালিলিওর জীবনের শেষ ন’বছর অত্যন্ত দুঃখকষ্টের মধ্যে অতিবাহিত হয়েছিল। এই ন’বছর তিনি ফ্লোরেন্সের শহরতলিতে নিজের গৃহে অন্তরীণ ছিলেন। যে মেয়েটি তাঁর দেখাশোনা করতো, এত দুঃখকষ্টের মধ্যে সেও মারা যায়। একসময় তিনি নিজেও অন্ধ হতে বসলেন। তখনও তাঁর মাথার মধ্যে নতুন নতুন অনেক নতুন চিন্তা ভিড় জমাতো কিন্তু তাঁর জীবন এতটাই বিস্বাদ হয়ে উঠেছিল যে নতুন করে আর কিছু ভাবতে ইচ্ছে করত না।
শেষের পাঁচ বছর পোপের অনুগ্রহে তাঁর বন্ধন একটু শিথিল হয়েছিল। তখন দেশবিদেশ থেকে অনেকেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতো। অবশেষে, ১৬৪২ সালের ৮ ই জানুয়ারি এই মহান বিজ্ঞানী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।