বিশেষ্য পদ
সূচিপত্র
যে পদের দ্বারা নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়। এখানে নাম বলতে বস্তু, ব্যক্তি, জাতি, শ্রেণি প্রভৃতি সকল নামকে বোঝানো হয়েছে। ইংরেজি গ্রামারে নাউন (Noun) হল বাংলা ব্যাকরণে বিশেষ্য পদ। যে পদের দ্বারা কোন ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, শ্রেণি, ভাব ইত্যাদির নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়। যেমন- আমাদের দেশ ভারত। এখানে ‘দেশ’ বলতে কোনো ভূভাগকে বোঝাচ্ছে তাই এটি বিশেষ্য পদ। আবার, ‘ভারত’ একটি দেশের নাম তাই ‘ভারত’ পদটিও বিশেষ্য পদ।
বিশেষ্য পদের শ্রেণি বিভাগ
বাংলা ব্যাকরণে বিশেষ্য পদ পাঁচ ধরণের হয়। সেগুলি হল-
১) সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য
যে বিশেষ্য পদ ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, নদনদী, গ্রন্থ, পত্রপত্রিকা, স্থাপত্য ইত্যাদি কোনো কিছুর নাম বোঝায় তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন-
১) ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র।
২) ভারতের রাজধানি নতুন দিল্লি।
৩) মুম্বাই ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানি।
৪) আগ্রায় রয়েছে তাজমহল।
৫) শাজাহান তাজমহল নির্মাণ করেছিলেন।
২) শ্রেণিবাচক বিশেষ্য
যে বিশেষ্য পদ জীব বা জড় জগতের কোনো শ্রেণি বা জাতি বা প্রজাতিকে নির্দেশ করে তাকে শ্রেণিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন-
১) ভারত একটি দেশ।
২) তিনি একজন সাহিত্যিক।
৩) রাজু খুব ভালো ছাত্র।
৪) তার বাবা একজন ডাক্তার।
৫) গালিলিও একজন বিজ্ঞানী ছিলেন।
৩) ভাববাচক বিশেষ্য
যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর গুণ বা ভাব বা ধর্মকে বোঝায় তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমন-
১) মানুষ এখন মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছে।
২) তবু তার দয়া হল না।
৩) তার বুদ্ধি একটু কম।
৪) সত্যি কথা বলার সাহস সবার থাকে না।
৫) সততার দাম ঠিক পাবে।
৪) ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য
যে বিশেষ্য পদ কোনো ক্রিয়ার নাম নির্দেশ করে তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে। অন্যভাবে বললে, ক্রিয়াজাত বিশেষ্য পদকে বলে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য। যেমন-
১) আমার খাওয়া হয়ে গেছে।
২) তোমার যাওয়া হবে না।
৩) ওদের পড়া হয়ে গেল।
৪) আজ ঘুমানো চলবে না।
৫) তোমার রান্না সবার পছন্দ।
৫) সমষ্টিবাচক বিশেষ্য
যে বিশেষ্য পদ ব্যক্তি, বস্তু ইত্যাদির সমষ্টিকে বোঝায় তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন-
১) বাক্য হল পদগুচ্ছের সংগঠন।
২) বাংলা শব্দসম্ভার বেশ সমৃদ্ধ।
৩) সৈন্যদল শরীরচর্চা করছে।
৪) বালকদল প্রবেশ করল।
৫) বালুকারাশি উত্তপ্ত হইয়াছিল।
এবারে একটি উদাহরণ দেখা যাক।
“বিশ্ববরেণ্য কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর রচনাবলিতে দরদ দিয়ে দেশমাতৃকার বন্দনা করেছেন।”
উপরের বাক্যটিতে পাঁচরকমের বিশেষ্য পদই রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য, কবি শ্রেণিবাচক বিশেষ্য, দরদ হল গুণ বা ভাববাচক বিশেষ্য, বন্দনা হল ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য এবং রচনাবলি হল সমষ্টিবাচক বিশেষ্য।