রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গুরু’ নাটক থেকে বড় প্রশ্ন
Class XI Bengali Drama “Guru” by Rabindranath Tagore || একাদশ শ্রেণির পাঠ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বাংলা নাটক “গুরু”। বড় প্রশ্ন (মান-৫)।
প্রশ্নঃ ‘গুরু’ নাটকে পঞ্চক চরিত্রটি বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গুরু’ নাটকের প্রধান চরিত্র গুরু। কিন্তু নাটকে যতখানি তিনি সামনে এসেছেন তার থেকে বেশি নেপথ্যে থেকেছেন। বরং সক্রিয়তার বিচারে ‘গুরু’ নাটকে প্রধান চরিত্র হল পঞ্চক। পঞ্চক অচলায়তনের একজন আবাসিক। তার প্রধান পরিচয় সে মহাবিদ্যান মহাপঞ্চকের ভাই। কিন্তু দাদার মতো শাস্ত্রচর্চায় তার মতি নেই। পড়ার যত বইগুলোকে সে বিদায় দিলেই বাঁচে। নিয়ম ভেঙ্গে সে গান শুরু করে। কারো কারো মতে সে নাকি অচলায়তনের ‘দুর্লক্ষ্যণ’।
যুক্তিবাদী– পঞ্চক চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল তার যুক্তিবাদী মানসিকতা। অচলায়তনে মানুষের উপরে শাস্ত্রের স্থান। তাই সেখানে হাজারটা নিয়ম, নিয়ম না মানলে বিশ-পঁচিশ হাজার রকমের প্রতিবিধান। পঞ্চক কোনোকিছুই চোখ বন্ধ করে মেনে নেওয়ার পক্ষপাতী ছিল না। তাই সে হাজারবার নিয়ম ভেঙ্গেছে আর প্রায়শ্চিত্ত করেছে। সে নিয়মগুলোকে যাচাই করেই দেখতে চেয়েছে সেগুলো সত্যি কি না। শুধু নিজে নয়, অচলায়তনের বাকি ছাত্রদেরও পঞ্চক এই কাজে উৎসাহিত করেছে।
সাহসী– অচলায়তনে প্রচলিত প্রাচীন রীতিনীতিগুলি অমান্য করার সাহস কারো ছিল না। সেইসব নিয়ম ভেঙ্গে পঞ্চক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে।
সহানুভূতিশীল– সুভদ্রের প্রতি সে সহানুভূতিশীল। আয়তনের সকলে সুভদ্রকে দিয়ে মহাতামস করানোর পক্ষে ছিল, পঞ্চক আর আচার্য তাকে বুক দিয়ে আগলেছে।
মানবিক– পঞ্চক উদার মানবিক প্রকৃতির যুবক। সে আয়তনের আবাসিক হয়েও অনায়াসে যূনক কিম্বা দর্ভকদের সঙ্গে মিশতে পেরেছে।
মুক্তমনা– পঞ্চক মুক্তপ্রাণের বার্তাবাহক। অচলায়তনের বদ্ধ কারাগারে তার দম বন্ধ হয়ে আসে। তাই সে লুকিয়ে চলে যায় যূনকদের পাড়ায়। দর্ভকদের পাড়ায় নির্বাসিত হয়ে সে মুক্তির স্বাদ পায়। সে মুক্তির গান গায়। শাস্ত্রের ভারে শিক্ষায়তন অচলায়তনে পরিণত হয়েছিল, পঞ্চক সেই অন্ধকারে মুক্তির আলো এনেছিল।
গুরু নাটকের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর