মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা বীরাঙ্গনা পত্রকাব্যের একাদশ সর্গ “নীলধ্বজের প্রতি জনা” কবিতা থেকে বড় প্রশ্নের উত্তর।
শ্রেণি- একাদশ|| কবিতা- নীলধ্বজের প্রতি জনা|| বড় প্রশ্ন (মান-৫) [WBCHSE Class 11 Bengali Poem Nilodhwojer Proti Jona]
প্রশ্নঃ “কি কুছলে নরাধম বধিল তাহারে”- কাকে বধ করার বলা হয়েছে? ‘নরাধম’ কাকে বলা হয়েছে? ‘কুছল’টি কী? অথবা, কীভাবে তাঁকে বধ করা হয়েছিল?
উত্তর- মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় এই অংশে পাণ্ডবদের অস্ত্রশিক্ষার গুরু দ্রোণাচার্যকে বধ করার কথা বলা হয়েছে। ‘নরাধম’ বলা হয়েছে মধ্যমপাণ্ডব অর্জুনকে।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে দ্রোনাচার্য কৌরবপক্ষে যোগদান করেছিলেন। দ্রোনাচার্য এমনই বীর যোদ্ধা ছিলেন যে যতক্ষণ তার হাতে তীরধনুক থাকত কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারত না। তাছাড়া চক্রব্যুহ রচনায় তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। পিতামহ ভীষ্ম মারা যাবার পর যুদ্ধের পঞ্চম দিনে তাঁকে কৌরব পক্ষের প্রধান সেনাপতি করা হয়েছিল। দ্রোনাচার্য একাই হাজার হাজার পাণ্ডব সৈন্য বধ করে পাণ্ডবদের দুর্বল করে দিয়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ জানতেন যে দ্রোনাচার্যকে মুখোমুখি যুদ্ধ করে হারানো সম্ভব নয়। আবার যতক্ষন তিনি অস্ত্র ধারন করবেন ততক্ষণ পাণ্ডবদের পরাজয় নিশ্চিত। তাই শ্রীকৃষ্ণ মনে মনে একটা পরিকল্পনা করলেন।
সবাই জানত যে দ্রোনাচার্য তাঁর পুত্র অশ্বত্থামাকে খুবই ভালোবাসত। ছেলেকে মারতে পারলেই দ্রোনাচার্যকে থামানো সম্ভব। পরিকল্পনামতো ভীম অশ্বত্থামা নামক একটি হাতিকে মেরে ফেলে জোরে ঘোষণা করে যে অশ্বত্থামা মারা গেছে। দ্রোনাচার্য বিশ্বাস করেননি। সত্যিটা জানার জন্য তিনি ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরকে জিজ্ঞাসা করেন। যুধিষ্ঠির বলেন যে অশ্বত্থামা নামক একটা হাতি মারা গেছে। কিন্তু রণবাদ্যের শব্দে দ্রোনাচার্য শেষ অংশটি শুনতে পাননি। যাইহোক, কথাটা সত্যি মনে করে যখন তিনি রথ থেকে নেমে ধ্যানে বসেন তখন ধৃষ্টদুম্ন্য তাঁকে বধ করেন। এইভাবে ছলনা করে অশ্বত্থামাকে বধ করা হয়েছিল। অর্জুন তাঁকে বধ না করলেও যেহেতু পরিকল্পনায় জড়িত ছিল তাই তাঁকে নরাধম বলা হয়েছে।