‘গুরু’ নাটকে আচার্য চরিত্র বিশ্লেষণ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গুরু’ নাটক থেকে বড় প্রশ্ন

Class XI Bengali Drama “Guru” by Rabindranath Tagore || একাদশ শ্রেণির পাঠ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বাংলা নাটক “গুরু”। বড় প্রশ্ন (মান-৫)।

প্রশ্নঃ ‘গুরু’ নাটকে আচার্য চরিত্রটি বিশ্লেষণ কর।

গুরু নাটক

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গুরু’ নাটকের কাহিনিভাগে রয়েছে অচলায়তন নামক একটি বিদ্যায়তনসেই আয়তনের প্রধান হলেন আচার্য অদীনপূণ্য। এই চরিত্রের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হল- 

নিয়মানুগত্যঃ অচলায়তনের আচার্য হিসেবে তিনি যে বিদ্বান বা পণ্ডিত ছিলেন একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। একইসঙ্গে, তিনি কঠোরভাবে নিয়মানুবর্তী ছিলেন। তাঁর নির্দেশে অচলায়তনের সমস্ত ব্রত যথাযথভাবে পালিত হয়েছে।

বাৎসল্যঃ পঞ্চক সহ অচলায়তনের সকল বালকের প্রতি আচার্য অদীনপূণ্য স্নেহশীল ছিলেন। তবে, সুভদ্রের প্রতি আচরণে তাঁর বাৎসল্যভাব বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে। 

ব্যর্থতাঃ গুরু তাঁকে এই আয়তনের আচার্য করেছিলেন। কিন্তু আচার্য হিসেবে তিনি চরম ব্যর্থ হয়েছেন। গুরুর অবর্তমানে তিনি পুঁথিকেই প্রাধান্য দিতে থাকেন। তাঁর নির্দেশেই অচলায়তনের শিক্ষা হয় পুঁথিসর্বস্ব আর ছাত্রদের জীবন হয় আচারসর্বস্ব।  মানুষের জন্য ধর্ম নয় বরং ধর্মের জন্যই মানুষের জীবন- এমনটাই তিনি শিক্ষা দিয়ে এসেছিলেন। তাঁর এই শিক্ষা বছরের পর বছর ধরে তিনি ছাত্রদের মধ্যে চালিত করেছেন। একসময় তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছেনকিন্তু ততদিনে সবকিছু তাঁর আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছিল।

মানসিক সংঘাতঃ নাটকে এই চরিত্রটির মানসিক দ্বন্দ্বই সবচেয়ে বেশি ফুটে উঠেছে। সুভদ্রের ‘মহাতামস’ ব্রত পালন করা নিয়েই তাঁর মনে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়। অচলায়তনের সকলে চায় সুভদ্র প্রায়শ্চিত্ত করুককিন্তু আচার্যের প্রাণ কেঁদে উঠে। তিনি সুভদ্রকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। অচলায়তন থেকে বিতাড়িত হয়ে দর্ভকদের পাড়ায় গিয়ে গুরুর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয় এবং আচার্য অকপটে তাঁর অপরাধ স্বীকার করেন। গুরুর আগমনেই তাঁর দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে।

গুরু নাটকের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

error: Content is protected !!