মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা বীরাঙ্গনা পত্রকাব্যের একাদশ সর্গ “নীলধ্বজের প্রতি জনা” কবিতা থেকে বড় প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্নটি হল- “এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে।” – বক্তা কে? তার ‘বিষম জ্বালাটি’ কী? কীভাবে তিনি এই জ্বালা ভুলতে পারবেন?
শ্রেণি- একাদশ|| কবিতা- নীলধ্বজের প্রতি জনা|| বড় প্রশ্ন (মান-৫) [WBCHSE Class 11 Bengali Poem Nilodhwojer Proti Jona]
প্রশ্নঃ “এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে।” – বক্তা কে? তার ‘বিষম জ্বালাটি’ কী? কীভাবে তিনি এই জ্বালা ভুলতে পারবেন? [১+২+২]
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় উদ্ধৃত অংশের বক্তা মাহেশ্বরী পুরীর রাজ্ঞী জনা।
জনা সদ্য-সন্তানহারানো একজন মা। তার পুত্র প্রবীর অর্জুনের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া ধরেছিল। এরপর মধ্যম পান্ডব অর্জুনের সঙ্গে অসম যুদ্ধে জনার একমাত্র পুত্র নিহত হয়। একজন মায়ের কাছে তার সন্তানের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। পুত্র প্রবীরের অকালমৃত্যুই হল জনার ‘বিষম জ্বালা’।
জনা একজন বুদ্ধিমতী নারী। সে জানে, “জন্মিলে মরিতে হবে”। তার পুত্র প্রবীর যদি অন্য কোনোভাবে মারা যেত তাহলে জনার পুত্রশোকই প্রবল হত। কিন্তু অর্জুন অন্যায় যুদ্ধে তার পুত্রকে হত্যা করেছিল। সেজন্য পুত্রশোকের পাশাপাশি জনার হৃদয়ে প্রতিশোধস্পৃহা জেগে উঠেছিল। তাই পুত্রের অকালমৃত্যু জনার কাছে এক “বিষম জ্বালা”।
জনা একজন ক্ষত্রিয়কন্যা এবং ক্ষত্রিয় কুল-রমণী। অন্তঃপুরবাসিনী হলেও ক্ষত্রিয়ধর্মের কথা তার জানা আছে। পুত্রের হত্যাকারী শত্রুকে বিনাশ করাই হল ক্ষত্রিয়ধর্ম। জনাও তাই চায়। সে তার স্বামী রাজা নীলাধ্বজকে অর্জুনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে। রাজা নীলধ্বজ অর্জুনের অহংকার চূর্ণ করে যুদ্ধক্ষেত্রে তাকে নাশ করলেই জনা এই ‘বিষম জ্বালা’ ভুলতে পারবে।