একাদশ শ্রেণী
বাড়ির কাছে আরশিনগর (বড় প্রশ্ন)
লালন ফকির
১। “বলব কী সেই পড়শীর কথা”- ‘পড়শী’ কে? উক্তিটির আলোকে ‘পড়শী’র স্বরূপ সম্পর্কে আলোচনা করো! ১+৪ অথবা,
‘‘পড়শি যদি আমায় ছুঁত’’- পড়শির সাধারণ পরিচয় দাও। পড়শি ছুঁলে কী হতো।
উত্তর- লালন ফকিরের ‘বাড়ীর কাছে আরশিনগর’ কবিতাটি একটি বাউলগান। বাউল দর্শন অনুযায়ী মানবশরীরের মধ্যে ঈশ্বরের বাসা। এই ঈশ্বর হল মানুষের অন্তরাত্মা অর্থাৎ তার একান্ত আপন ‘মনের মানুষ’। আলোচ্য গানটিতে এই মনের মানুষকে কবি আরশিনগরে বসতকারী “পড়শী” বলে অভিহিত করেছেন।
পড়শীকে দেখার জন্য কবি আকুল হয়ে উঠেছেন কিন্তু সে এমন জায়গায় বসবাস করে যে তার কাছে পৌঁছানো খুবই কঠিন। পড়শির গ্রামের চারিদিকে অগাধ জলরাশি। কবি সেই জলরাশি অতিক্রম করে যেতে পারেন না কারণ সেই জলের কোনো কিনারা নেই। আবার কবিকে আরশীনগরে পৌঁছে দিতে পারে এমন কোনো মাঝিও সেখানে নেই। এখানে রূপকের আশ্রয়ে কবি যা বলতে চেয়েছেন তা হল, কবির পড়শী বা মনের মানুষ বিষয়-বাসনার উর্দ্ধে অবস্থান করেন কিন্তু কবিকে ঘিরে রেখেছে অগণিত পার্থিব বাসনা। এই জন্য একেই জায়গায় বসবাস করেও কবির সঙ্গে তাঁর মনের মানুষের ‘লক্ষ্য যোজন ফাঁক’ রয়ে গেছে।
পরের পাতায়