কীভাবে উচ্ছব প্রেত হয়ে গিয়েছিল…

মহাশ্বেতা দেবীর গল্প “ভাত”

বড় প্রশ্ন (মান- ৫)

১) ‘পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছব প্রেত হয়ে আছে’- কীভাবে উচ্ছব প্রেত হয়ে গিয়েছিল? কীভাবে সে আবার মানুষ হয়ে উঠল? অথবা,

‘সেই আশাতেই প্রেত উচ্ছব মানুষ হয়ে গেল’- কীভাবে উচ্ছব প্রেত হয়ে গিয়েছিল? কীভাবে সে আবার মানুষ হয়ে উঠল? অথবা,

‘তখনই উচ্ছব প্রেত হয়ে গেছে’- কীভাবে উচ্ছব প্রেত হয়ে গিয়েছিল? কীভাবে সে আবার মানুষ হয়ে উঠল?

উত্তর- মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে উচ্ছব নাইয়া ভাত না পেয়ে প্রেত হয়ে গিয়েছিল। যখন থেকে পোকায় ধান নষ্ট করেছিল তখন থেকেই উচ্ছবের আধপেটা-সিকিপেটা উপোসের শুরু হয়েছিল। তারপর মাতলার জলে স্ত্রী-সন্তানদের হারিয়ে উচ্ছব কদিন কিছুই খায়নি। ভাতের অভাবেই উচ্ছব মানুষ থেকে প্রেত হয়ে গিয়েছিল।

মহাশ্বেতা দেবীর গল্প ভাত

    পেটে ভাত পড়তেই প্রেত উচ্ছব আবার মানুষ হয়ে উঠেছিল। কীভাবে সে আস্তে আস্তে মানুষ হয়েছিল লেখিকা তার বিবরণ দিয়েছেন। দেশের বাড়িতে সর্বস্ব হারিয়ে উচ্ছব কলকাতা এসেছিল ভাতের আশায়। শরীরে তার বল ছিল না তবু বাসিনীর মনিব বাড়িতে এসে সে আড়াই মণ কাঠ কেটেছিল শুধুমাত্র “ভাতের হুতাশে”। কাঠ কাটতে কাটতে ভাতের গন্ধ তাকে উতলা করে তোলে।

    কাঠ কাটা শেষ করে উচ্ছব শিবমন্দিরের চাতালে বসে। তার মনে পড়ে চন্নুনি, চন্নুনির মা আর খোকাদের কথা। আশ্চর্যজনকভাবে তার চোখে জল আসে। লেখিকা বলেছেন- “ভাত খাবে আজ। সেই আশাতেই প্রেত উচ্ছব মানুষ হয়ে গেল নাকি?” বস্তুতপক্ষে, বন্যায় স্ত্রী-সন্তান হারিয়েও উচ্ছবের চোখে জল আসেনি। ক্ষুধার জ্বালায় সে কাঁদতে ভুলে গিয়েছিল।

    গল্পের শেষে দেখা যায় অশৌচ বাড়ির ভাত গোগ্রাসে গিলে সে স্বর্গসুখ পায়। ভাতের স্পর্শে যে সুখ চন্নুনীর মা তাকে সেই সুখ দিতে পারেনি কোনোদিন। পেটে ভাত পড়তেই বাড়ি ফেরার কথা মনে আসে-“ক্যানিং হয়ে দেশঘরে যেতে হবে”। এভাবে উচ্ছব প্রেত থেকে আবার মানুষ হয়ে উঠেছিল।

error: Content is protected !!