একাদশ শ্রেণী
কর্তার ভূত
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- “দেশের লোক ভারি নিশ্চিন্ত হলো”- কোন প্রসঙ্গে একথা বলা হয়েছে? নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ কি? (২+৩)
উত্তরঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘কর্তার ভূত’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। বুড়ো কর্তা যখন মরণাপন্ন হলো তখন দেশের সবাই বলে উঠেছিল ‘তুমি গেলে আমাদের কি দশা হবে?’ কর্তাও মনে মনে ভেবেছিলো যে তার মৃত্যুর পর দেশবাসীর অভিভাবক কে হবে। শেষ পর্যন্ত দেবতার দয়ায় একটা উপায় হয়েছিল। বুড়ো কর্তা যাতে মারা যাওয়ার পরও ভূত হয়ে দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে থাকে সেই ব্যবস্থা করা হলো। এই প্রসঙ্গেই বলা হয়েছে “দেশের লোক ভারি নিশ্চিন্ত হল”।
বুড়ো কর্তা মারা গেলে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটাই দেশের লোকের প্রধান চিন্তা হয়ে ওঠে। আসলে এই দেশবাসী ভীতু, রক্ষণশীল এবং আত্মমর্যাদাহীন। সেই জন্য তাদের পথ চলতে একজন অভিভাবক তথা অবলম্বন দরকার। নতুন কিছুকে গ্রহন করার সাহস এবং ক্ষমতা তাদের নেই। সেই জন্য তারা পুরাতনকে আঁকড়ে ধরে থাকায় শ্রেয় বলে মনে করল। লেখক বলেছেন- ‘ভবিষ্যতকে মানলেই তার জন্য যত ভাবনা, ভুতকে মানলে কোন ভাবনাই নেই’। আবার অন্যভাবে বললে মানুষের মৃত্যু আছে কিন্তু ভূতের মৃত্যু নেই। সেইজন্য কর্তার ভূতকে স্বীকার করে নিলে নতুনকরে আর অভিভাবকহীন হতে হবে না। এই ভাবে অতীত ঐতিহ্যের কাছে নিজেদেরকে সমর্পণ করে দেশবাসী নিশ্চিন্ত হয়েছিল।