বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
একাদশ শ্রেণী
প্রশ্ন- শ্রীচৈতন্যদেব কত খ্রিস্টাব্দে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? বাংলা সাহিত্যে চৈতন্যদেবের প্রভাব আলোচনা করো ৷ ২+৩
উত্তর- শ্রীচৈতন্যদেব ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দের ফাল্গুনী পূর্ণিমার দিনে নদীয়া জেলার অন্তর্গত নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলা সাহিত্যে চৈতন্য-প্রভাব
মধ্যযুগের বাংলা সমাজ, সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে যে মহাপুরুষের অবদান সবথেকে বেশি তিনি হলেন শ্রীচৈতন্যদেব। তাঁকে কেন্দ্র করেই বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের যুগবিভাজন করা হয়ে থাকে, যথা- প্রাক্-চৈতন্য যুগ, চৈতন্য সমসাময়িক এবং চৈতন্যোত্তর যুগ। নিজে সাহিত্যিক না হয়েও কোন একটি ভাষার সাহিত্যের উপর এতোখানি প্রভাব বিস্তার করাটা সত্যিই বিরল ঘটনা।
চৈতন্যদেবের প্রভাবে বৈষ্ণবধর্ম নির্দিষ্ট তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা পরবর্তীকালের বৈষ্ণব সাহিত্যকে প্রভাবিত করেছিল। এইজন্য চৈতন্য-পূর্ববর্তী এবং চৈতন্য-পরবর্তীকালের পদাবলিতে অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
শ্রীচৈতন্যদেবের আগে বাংলায় কোনো জীবনীসাহিত্য লিখিত হয়নি, তাঁকে কেন্দ্র করেই প্রথম বাংলা জীবনীকাব্য রচনার সুত্রপাত।
তাঁর মহৎ জীবনাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বৈষ্ণব কবিগণ ‘গৌরাঙ্গ-বিষয়ক পদ’ এবং ‘গৌরচন্দ্রিকা’ রচনা শুরু করেন।
সর্বোপরি, শ্রীচৈতন্যদেব যে ভক্তিপ্রেমের বাণী প্রচার করেছিলেন তা পরবর্তী দু’শ বছরের বাংলা সাহিত্যকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করেছিল।