ভাষাবিজ্ঞান আলোচনার বিভিন্ন ধারা

ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা

দ্বাদশ শ্রেণি

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- ভাষাবিজ্ঞান আলোচনার বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে আলোচনা কর। ৫

উতর- মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হল ভাষা। আর, ভাষা সম্পর্কিত বিজ্ঞানসম্মত আলোচনাকে ভাষাবিজ্ঞান বলা হয়। ভাষাবিজ্ঞানের পরিধি যেমন ব্যাপক সেইরকম এর আলোচনা পদ্ধতিও অনেকগুলি। প্রধানত তিনটি শাখায় ভাষাবিজ্ঞানের চর্চা হয়। যথা-

তুলনামুলক ভাষাবিজ্ঞান– স্যার ইউলিয়াম জোনস প্রথম তুলনামুলক পদ্ধতিতে ভাষাবিজ্ঞান চর্চার সুত্রপাত করেন (১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে)বহু ভাষাবিদ স্যার জোন্স লক্ষ্য করেন যে গ্রিক, ল্যাতিন, সংস্কৃত, ফরাসি প্রভৃতি ভাষা গুলির মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে। এর থেকে তিনি সিধান্তে আসেন যে, এই সব কটি ভাষার উৎস একই ভাষা। বস্তুতপক্ষে, তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের প্রধান কাজ হল সমগোত্রীয় ভাষাগুলির মধ্যে সাদৃশ্য নিরূপণ করা।

ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান– একটি নির্দিষ্ট ভাষার বিবর্তনের নানা স্তর নিয়ে আলোচনা করে ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান। ভাষার বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায়ে একটি ভাষার বিভিন্ন রূপভেদ নিয়ে ব্যাখা দেয় ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান। যেমন- বৈদিকভাষা থেকে সংস্কৃত, সংস্কৃত থেকে প্রাকৃত, অপভ্রংশ, অবহট্টঠ স্তর পেরিয়ে কীভাবে বাংলা ভাষার জন্ম হল এবং প্রতিটি স্তরের ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য কী কী- এসবেই ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনার বিষয়।

বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান– ভাষাবিজ্ঞান আলোচনার নবীনতম শাখা হল বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান । একটি ভাষার বর্তমান রূপকে নিয়ে বিভিন্ন দিক আলোচনা করাই হল বর্ণনা মূলক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। এর অনেক গুলি শাখা রয়েছে, যথা- ধ্বনি বিজ্ঞান, ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, শব্দার্থতত্ত্ব, প্রভৃতি। আধুনিক কালের বর্ণনা মূলক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনা পৃথিবীর সমস্ত দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

error: Content is protected !!