দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
গল্প- ভারতবর্ষ
বড় প্রশ্ন (মান ৫)
প্রশ্ন- ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে উল্লেখিত বাজারটির বর্ণনা দাও। ৫
উত্তর- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে একটি বাজারকে কেন্দ্র করে। পিচের সড়ক যেখানে বাঁক নিয়েছে, সেখানেই গড়ে উঠেছিল এই বাজার। বাজারের পিছনেই বাঁশবনে ঢাকা গ্রাম। সেই গ্রামে সভ্যতার আলো পৌঁছায় নি কিন্তু বাজারে বিদ্যুৎ-সংযোগ ছিল। আশেপাশের গ্রামের লোকেরা এই বাজারে আসত এবং রাত ন’টা পর্যন্ত বাজার জমজমাট থাকত।
বাজারে বেশ কয়েকটি দোকান ছিল। তিনটে চায়ের দোকান, দুটো মিষ্টি-সন্দেশের, তিনটে পোশাকের, একটা মনোহারির এবং দুটো মুদিখানার দোকান। তাছাড়া একটি সবজির আড়ত এবং একটি হাস্কিং মিলও ছিল। বাজারের পিছনেই ছিল একটা ইটভাটা। মোটকথা, গ্রামের মানুষের প্রয়োজন মেটানোর সবরকম ব্যবস্থাই ছিল সেই বাজারে।
রাত্রে বাজার বন্ধ হলে গ্রাম থেকে আসা লোকগুলি গ্রামেই ফিরে যেত। দিনের বেলায় বাজার যতখানি সরগরম থাকত, রাত্রিবেলায় ততখানি নিস্তব্ধতা বিরাজ করত। তখন জনমানবহীন পিচরাস্তার উপর শুধু কয়েকটি নেড়িকুত্তার ছায়া ঘুরে বেড়াত। শহরগামী দু’একটা ট্রাকের শব্দ ছাড়া সবকিছু চুপচাপ, থমথমে। রাত্রিকালীন বাজারের নিস্তব্ধতা বর্ণনা প্রসঙ্গে লেখক যথার্থই বলেছেন, ‘বাঁকের মুখে অদ্যিকালের বটগাছে পেঁচার ডাকও স্তব্ধতার অন্তর্গত মনে হয়।”