একাদশ শ্রেণী
শিক্ষার সার্কাস (বড় প্রশ্ন)
প্রশ্ন ১- ‘সে যেখানে গেছে, সেটা ধোঁকা’- কার কথা বলা হয়েছে? কথাটির তাৎপর্য কী? অথবা,
‘জ্ঞান কোথায় গেল?’- এর উত্তরে কবি কী বলেছেন?কথাটির তাৎপর্য কী? অথবা,
৪) “জ্ঞান কোথায় গেল?” জ্ঞানের অভাব “শিক্ষার সার্কাস’ কবিতায় কীভাবে ব্যাঞ্জিত হয়েছে?
উত্তর- আইয়াপ্পা পানিকরের লেখা ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতাটিতে পরীক্ষাসর্বস্ব শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করা হয়েছে। কবির সরাসরি প্রশ্ন – “জ্ঞান কোথায় গেল?’’ এর উত্তরে কবি বলেছেন যে সে যেখানে গেছে সেটা ধোঁকা।
শিক্ষার দর্শন অনুযায়ী জ্ঞান হলো অখণ্ড। কিন্তু কোন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হলে এই সামগ্রিক জ্ঞানকে নানাভাবে বিভাজিত করে শিক্ষাগ্রহণ করতে হয়। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় এই কাজটিই করা হয়। শিশুর বয়স এবং পরিনমন অনুযায়ী প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়। সেইজন্য শিক্ষালয়গুলিতে নির্দিষ্ট বয়সে নির্দিষ্ট শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। একজন শিক্ষার্থীকে একটি শ্রেণি থেকে আর একটি শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে হলে পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। পরীক্ষায় পাশ করাই যেহেতু সফলতার মাপকাঠি সেই জন্য শিক্ষার্থীরা যেটুকু পড়াশুনা করে কেবলমাত্র পাশ করার জন্য করে।
পাশ করার মাধামেই প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় সার্থকতা আসে এবং কোন মানুষ জীবিকা গ্রহণের (চাকরি পাওয়ার) যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। সেই জন্য শৈশবে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণী এবং এইভাবে শিক্ষার সবকটি স্তর পেরিয়ে যৌবনে উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু দেখা গেছে সমস্ত শ্রেণি পাশ করেও একজন মানুষ প্রায় কিছুই শেখেনা। আসলে সে ততটুকুই শিক্ষাগ্রহণ করেছে যতটুকু তার পাশ করার জন্য প্রয়োজন। কবি বর্তমান শিক্ষাব্যাবস্থায় জ্ঞানের বড় অভাব লক্ষ্য করেছেন। তাই কবিতার শেষে তিনি বলেছেন-‘সে যেখানে গেছে, সেটা ধোঁকা’।