শিকার
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- “এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে”- কে, কীভাবে ভোরের আলোয় নেমে এসেছিল? ‘ভোরের আলোয়’ তার কী পরিণতি হয়েছিল নিজের ভাষায় লেখ। ২+৩
উত্তর- কবি জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতার দ্বিতীয় ভোরে একটি হরিণের উল্লেখ রয়েছে। আলোচ্য অংশে ‘সে’ বলতে সেই সুন্দর বাদামি হরিণের কথা বলা হয়েছে।
কথায় আছে, নিজের মাংসের জন্য হরিণ জগতের শত্রু। আবার, হরিণের মাংস সকলের প্রিয় হলেও হরিণ নিজে তৃণভোজী এবং নিরীহ একটি প্রাণী। সেইজন্য তাকে সদাসর্বদাই অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সংগ্রাম করতে হয়। এই কবিতার হরিণটিও সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে বেড়িয়েছিল। ভোরের আলো ফুটে উঠতেই সে প্রকাশ্যে এসেছিল।
ভোরের আলোয় নেমে সে প্রথমে ‘কচি বাতাবি লেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস’ খেতে শুরু করে। তারপর, রাতের ক্লান্তি মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে হরিণটি নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে নেমে পড়ে। এখন আর প্রাণনাশের ভয় নেই, তাই ‘সাহসে, সাধে, সৌন্দর্যে’ হরিণীর দলকে চমকে দেওয়ার জন্য সে উতলা হয়ে পড়ে। সে স্বপ্নের জাল বুনছিলো এমন সময় একটা বন্দুকের শব্দে নদীর জল রক্তাক্ত হয়ে যায়। একদল ‘টেরিকাটা’ শিকারীর অব্যর্থ লক্ষ্যভেদের ফলে জলজ্যান্ত হরিণটি মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়।
আপনা মাংসে হরিণ জগতের বৈরী! বনের পশু থেকে শুরু করে শহুরে মানুষ- সকলের লোলুপ দৃষ্টি হরিণ মাংসের দিকে। ভোরের আলোয় নেমে এসে সুন্দর বাদামি হরিণটি মানুষের লালসার শিকার হয়েছিল।