শিকার কবিতায় উল্লেখিত দুটি ভোরের বর্ণনা

পাঠ্য কবিতা- শিকার

কবি- জীবনানন্দ দাশ

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- শিকার কবিতায় যে দুটি ভোরের উল্লেখ রয়েছে সেগুলির বর্ণনা দাও। 

উত্তর- জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতাটিতে কবি দুটি ভোরের বর্ণনা দিয়েছেন। নানা দৃশ্যপট রচনার মাধ্যমে কবি উক্ত দুই ভোরের ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন ।

জীবনানন্দের শিকার কবিতা

প্রথম ভোর– কবিতায় বর্ণিত প্রথম ভোরটি একটি অকৃত্রিম প্রাকৃতিক ভোর। তখন আকাশের রং ঘাস ফড়িং-এর শরীরের মতো কোমল নীল। চারিদিকে পেয়ারা, নোনা প্রভৃতি গাছগাছালি। ভোরের আলো তখনও সম্পূর্ণ প্রকাশ পায়নি। তাই একটি তারা তখনও আকাশে ছিল। কবির কল্পনায় এই তারাটি কোন এক গ্রাম্য বধূর মতো অথবা সেই মুক্তার মতো যা মিশরের এক মানবী কবির নীল মদের গ্লাসে রেখেছিল। দেশোয়ালিরা শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য আগুন জ্বেলেছিল- মোরগ ফুলের মতো লাল সেই আগুন সূর্য ওঠা পর্যন্ত জ্বেলেছিল। সব মিলিয়ে কবি এমন এক ভোরের চিত্ররূপ  আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন যেখানে প্রকৃতি ময়ুরের ডানার মতো ঝলমল করছে।

দ্বিতীয় ভোর– মানুষের লালসা কীভাবে প্রকৃতিকে কালিমালিপ্ত করছে তার বর্ণনা রয়েছে এই দ্বিতীয় ভোরে। সারারাত অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম করে একটি হরিণ ভোরের আলোয় নেমে এসেছে। প্রকৃতির মুক্ত কোলে নিজেকে নিরাপদ মনে করেই হরিণটি কখনো ঘাস ছিড়ে খেয়েছে আবার কখনো নদীর ঠাণ্ডা জলে নিজেকে সঁপে দিয়েছে। হঠাৎ একটি অদ্ভুত শব্দ সেই হরিণটিকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করে। কয়েকটি টেরিকাটা মানুষ নির্বিকারে সেই মাংস খায় ।

এইভাবে জীবনানন্দীয় বর্ণনায় দুটি পৃথক ভোরের ছবি আমাদের সামনে ফুটে উঠেছে ।

error: Content is protected !!