দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
গল্প- ভারতবর্ষ
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- ‘শেষ রােদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল’- কার কথা বলা হয়েছে? সে ‘ক্রমশ আবছা হয়ে গেল’ কেন? ১+৪ (২০১৫)
উত্তর- প্রশ্নোধৃত অংশে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের সেই বুড়ির কথা বলা হয়েছে যার মরদেহকে কেন্দ্র করে হিন্দু-মুসলিম দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল।
‘ভারতবর্ষ’ গল্পের শেষ অংশে দেখা যায় যে বুড়ির মরদেহের উপর অধিকারের দাবিতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এমন সময় উপস্থিত জনতাকে আশ্চর্যচকিত করে বুড়ির মড়াটা নড়েচড়ে উঠে বসল। অনেকেই জানতে চেয়েছিল সে কোন ধর্মের। কিন্তু বুড়ি কারো কোনো প্রশ্নের সদুত্তর না দিয়ে নড়বড় করে রাস্তা ধরে এগিয়ে চলল। উত্তেজিত জনতাকে পিছনে ফেলে বুড়ি শেষ রোদের আলোয় ‘দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল’। বুড়ির এই ‘ক্রমশ আবছা হয়ে’ যাওয়ার আলাদা একটা তাৎপর্য রয়েছে।
‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বুড়ি কোনো সাধারণ মানবী নয়, এই বুড়ি যেন মুর্তিময়ী ভারতজননী। বুড়ি সেই ভারতবর্ষের প্রতীক যে ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষভাবে বহু জাতিকে নিজের বুকে আশ্রয় দিয়েছে এবং যে ভারতবর্ষ ঐতিহাসিক কাল থেকে বহু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রত্যক্ষ করেছে। উত্তেজিত জনতাকে পিছনে ফেলে বুড়ি এগিয়ে চলে, যেমনভাবে এর আগেও বহু বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে ভারতীয় সভ্যতা এগিয়ে গেছে। বুড়ি যত সামনের দিকে এগিয়ে চলে ততই সে জনতার চোখে ক্রমশ আবছা হয়ে যায়।