দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
গল্প- ভারতবর্ষ
বড় প্রশ্ন (মান ৫)
প্রশ্ন- “সেই সময়ই এল এক বুড়ি”- লেখক বুড়ির সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো। ৫ (২০১৯)
উত্তর- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে একটি বুড়ি। গ্রাম-পার্শ্ববর্তী একটি ছোট্ট বাজারে এক বুড়ির আগমণ, তার আকস্মিক মৃত্যু এবং তার মরদেহ নিয়ে গ্রামস্থ হিন্দু-মুসলিমের বিবাদ এই গল্পের প্রধান বিষয়। পউষে বাদলার’ অকাল-দুর্যোগের দিনে এক সকালে সেই বুড়ির আবির্ভাব ঘটেছিল। লেখক সুন্দরভাবে সেই বুড়ির চেহারা এবং পোশাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা তুলে ধরেছেন।
বুড়ির চেহারা– সে ছিল এক থুত্থুড়ে কুঁজো বুড়ি যাকে দেখে ভিখিরি বলেই মনে হবে। তার রাক্ষুসে চেহারায় একমাথা সাদা চুল এবং মুখে দীর্ঘায়ুর ছাপ পড়েছে।
পোশাক-পরিচ্ছদ– তার পরনে ছিল একটি ছেঁড়া নোংরা কাপড় এবং গায়ে জড়ানো ছিল একটি চিটচিটে তুলোর কম্বল। এক হাতে বেঁটে লাঠি নিয়ে পিচের উপর হেঁটে হেঁটে হেটে এসে হাজির হয়েছিল চায়ের দোকানের সামনে।
ব্যক্তিত্ব- বুড়ি ছিল খুবই মেজাজি। বাজারের লোকজন তাকে নিয়ে ঠাট্টাতামশা করলে সেও মুখের উপর জবাব দিয়েছিল। তার ব্যাপারে কেউ নাক গলাক, এটা তার পছন্দ ছিল না। একজন তার ঠিকানা জানতে চাইলে সে বলেছিল -‘সে কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা?’ তাকে দেখে ভিখিরি মনে হলেও সে কিন্তু ভিখিরি ছিল না। চা খেয়ে সে নিজেই দাম মিটিয়েছে।
বুড়ির আরেকটি বিশেষ পরিচয় হল যে সে একজন বৃক্ষবাসিনী। দুর্যোগপূর্ণ দিনে সে বাজারের বটগাছের খোন্দলে আশ্রয় নিয়েছিল।