সত্যসাপেক্ষ তত্ত্ব

শব্দার্থতত্ত্ব

পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যসূচির অন্তর্গত বাংলা ভাষাবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় শব্দার্থতত্ত্ব। WBCHSE Class 12 Bengali Linguistic fifth chapter: Shabdartha Tottwa or Semantics.

প্রশ্ন: শব্দার্থের সত্যসাপেক্ষ তত্ত্বটি আলোচনা করো।

উত্তর- ভাষাবিজ্ঞানের একটি অন্যতম শাখা হলো শব্দার্থতত্ত্ব। শব্দের অর্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে এই শাখাতে আলোচনা করা হয়। শব্দার্থ নিরূপনের যেক’টি পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সত্যসাপেক্ষ তত্ত্ব। এই তত্ত্ব অনুযায়ী বাক্য শুধু শব্দসমষ্টি নয়, তা হলো অর্থবহ শব্দের সমষ্টি।

শব্দার্থতত্ত্ব
সত্যসাপেক্ষ তত্ত্ব

সত্যসাপেক্ষ তত্ত্বে একটি বাক্যের অর্থ কে বাস্তব জগতের নিরিখে বিচার করা হয়। যদি সেই বাক্যটি বাস্তব জগতে সত্য বলে প্রমাণিত হয় তবেই সেটি ‘সত্য’ বলে বিবেচিত হবে, নতুবা সেটিকে ‘মিথ্যা’ বলা হবে। যেমন-

শিক্ষক ছাত্র পড়ায়।
ছাত্র শিক্ষক পড়ায়।

উপরের দুটি বাক্যে একই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু তাদের বিন্যাস ভিন্ন প্রকৃতির এবং সেইজন্য তাদের অর্থও ভিন্ন ভিন্ন। প্রথম বাক্যটির অর্থ বাস্তব জগতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তাই এটি সত্য এবং দ্বিতীয় বাক্যটি মিথ্যা।

সত্যসাপেক্ষ তত্ত্ব শুধুমাত্র চিরন্তন সত্যকে তুলে ধরে না, বাক্যের আক্ষরিক অর্থকে প্রাকৃতিক জগতের মানদন্ডে বিচার করে তার সত্যতা নিরূপণ করে। যেমন- “আকাশ থেকে বৃষ্টির বারিধারা মাটিতে নেমে আসে”- এই বাক্যটি চিরন্তন সত্য। কিন্তু যদি বলা হয় “এখন বৃষ্টি পড়ছে”, তবে এই বাক্যের সত্যতা নির্ভর করবে যখন এটি বলা হচ্ছে সেই সময় সত্যিই বৃষ্টিপাত হচ্ছিল কিনা তার ওপর।

শব্দার্থতত্ত্বের আলোচনায় সত্যসাপেক্ষ তত্ত্বটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভাষার অস্পষ্টতা দূরীকরণে এই তত্ত্ব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

এই অধ্যায় থেকে অন্যান্য প্রশ্ন:

error: Content is protected !!