বাংলা গানে সলিল চৌধুরি

দ্বাদশ শ্রেণি

বাংলা গানের ইতিহাস

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্নবাংলা গানের ধারায় সলিল চৌধুরীর বিশিষ্টতা সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর– বাংলা তথা ভারতীয় সংগীতের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য নাম হল সলিল চৌধুরী (১৯২৩- ১৯৯৫)। প্রথম জীবনে তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ‘বিচারপতি’, ‘রানার’, ‘অবাক পৃথিবী’র মতো বহু সার্থক গণসঙ্গীতের স্রষ্টা তিনি।

বাংলা চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক হিসাবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৪৯ সালে ‘পরিবর্তন‘ ছবির মাধ্যমে। ‘বাঁশের কেল্লা’, ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’, ‘গঙ্গা’, ‘কিনু গোয়ালার গলি’, ‘লালপাথর’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘হারানের নাতজামাই’ প্রভৃতি বহু বাংলা ছবিতে তিনি সুরারোপ করেছিলেন।

১৯৫৩ সালে নির্মিত ‘দো বিঘা জমিন‘ ছবির মাধ্যমে হিন্দি সিনেমার সংগীতকার হিসেবে তাঁর পথচলা শুরু হয়। এরপর একে একে ‘জাগতে রহো’, ‘মুসাফির’, ‘মধুমতি’, ‘হাফটিকিট’, ‘আনন্দ’, ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ সহ প্রায় ৭৫ টি হিন্দি সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছেন।

বাংলা, হিন্দি ছাড়াও তিনি প্রায় ২৬টি মালায়ালাম ছবিতে এবং বেশ কিছু তামিল, কন্নড়, তেলুগু, মারাঠি, অসমিয়া, গুজরাটি ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।

বিশেষত্ব

১) তিনি একাধারে একজন সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার, কবি, গল্পকার এবং একজন সার্থক আয়োজক ছিলেন।

২) তাঁর গানে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য সংগীতের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

৩) বাংলা গানে পাশ্চাত্য সংগীতের ব্যবহারের ব্যাপারে তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রপথিক।

৪) তিনি প্রথম ‘কয়্যার’ সংগীতের প্রবর্তন করেন।

৫) তিনি প্রকৃত অর্থেই সুরের জাদুকর ছিলেন। সুর নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন এবং তাঁর গানে সেগুলি প্রয়োগ করতেন। তাঁর সংগীতপ্রতিভা ছিল বহুমুখী এবং সৃজনশীল।

error: Content is protected !!