পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন
কবি- ব্রেটল্ট ব্রেখট
অনুবাদ- শঙ্খ ঘোষ
প্রশ্ন – পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন কবিতাটির নামকরণের তাৎপর্য আলোচনা কর। ৫
উত্তর- বের্টোল্ট ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতার নামকরণে একটি বিশেষ ব্যঞ্জনার ইঙ্গিত রয়েছে।
আলোচ্য কবিতার বিষয়বস্তু হল সাধারণ মানুষের প্রতি ইতিহাসের বঞ্চনা। একটি দেশে একজনই রাজা থাকে, প্রজারাই হল দেশের আসল সম্পদ। অথচ, ইতিহাস বই খুললে শুধু রাজাদের কাহিনি চোখে পড়ে, কোনো ঐতিহাসিক সাধারণ মানুষের কথা বলেননি। এইসব সাধারণ মানুষেরাই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কালজয়ী স্থাপত্য নির্মাণ করেছিল। এরাই রাজাকে যুদ্ধে জেতাত, যুদ্ধে পরাজিত হলে এরা রাজার থেকে বেশি চোখের জল ফেলত। এমনকি, রাজা যুদ্ধ করতে গেলে এরা রাজাকে রান্না করে খাওয়াতো। ইতিহাসে এদের এত অবদান তবুও ইতিহাসের পাতায় বঞ্চিত তারা।
কিন্তু এই বঞ্চনার কথা জানার কোন উপায় ছিলনা, কারণ এরা কেউ লেখাপড়া জানতো না। ইতিহাস বই খুললে দেখা যাবে, সমাজের সকল মানুষের শিক্ষালাভের অধিকার ছিল না। রাজা, মন্ত্রী বা অভিজাত পরিবারের ছেলেরাই কেবল লেখাপড়া শিখতে পারত। শিক্ষার অধিকার সার্বজনীন হওয়ার পর একজন মজুরের ছেলেও লেখাপড়ার সুযোগ পায়। আর ঠিক তখনই সে জানতে পারে যে ইতিহাসের সব কৃতিত্ব রাজা একাই নিয়ে বসে আছে। তখনই তার মনে এইসব প্রশ্ন আসে।
এইভাবে, আলোচ্য কবিতায় পড়তে জানে এমন একজন মজুরের কয়েকটি প্রশ্নের মাধ্যমে কবি ঐতিহাসিক সত্যকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। সেইজন্য এই নামকরণ সম্পূর্ণরূপে সার্থক হয়েছে। (শব্দসংখ্যা ১৮০)