নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা

জীবনানন্দ দাশের শিকার

প্রশ্ন- ‘হিম- নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম’- কার ঘুমের কথা বলা হয়েছে? ‘নিস্পন্দ নিরপরাধ’ ঘুমের তাৎপর্য লেখ।

উত্তর- জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতায় ‘নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম’ বলতে হরিণটির চিরনিদ্রার কথা বলা হয়েছে।

জীবনানন্দের শিকার কবিতা
শিকার

‘শিকার’ কবিতায় একটি হরিণের করুণ মৃত্যুর বিবরণ রয়েছে। কয়েকজন সৌখিন শিকারির লালসার শিকার হয়ে একটি নিরীহ হরিণকে প্রাণ হারাতে হয়। বন্দুকের গুলিতে তার প্রাণবন্ত দেহ নিথর হয়ে গিয়েছিল। যতক্ষণ দেহে প্রাণ থাকে ততক্ষণ হৃদয়ের স্পন্দন অনুভব করা যায়। আলোচ্য কবিতায় হরিণটি নিহত হয়েছিল। সেই জন্য তার ঘুমকে কবি নিস্পন্দ বলেছেন।

একইসঙ্গে কবি হরিণের ঘুমকে ‘নিরপরাধ’ বলেছেন। বাস্তবিকপক্ষে এই হরিণটি কোনো অপরাধ করেনি। সারারাত ধরে অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম করে ভোরের আলোয় সে সমতলে নেমে এসেছিল। সূর্যালোকিত পৃথিবী তার কাছে নিরাপদ মনে হয়েছিল বলে সে নিশ্চিন্তে সবুজ ঘাস খেয়ে উদরপূর্তি করেছে। তারপর, অনিদ্রাজনিত ক্লান্তি দূর করার জন্য সে নদীর ঠান্ডা জলে নেমেছে এবং সর্বোপরি, নিজেকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনেছে। কিন্তু হরিণটি জানতো না যে মানুষের লালসা কোনো অংশে পশুর থেকে কম নয়। যখন সে মনের আনন্দে স্রোতের আবেগ অনুভব করছিল, তখন কয়েকজন টেরিকাটা মানুষ তাকে হত্যা করেছিল। এইজন্য কবি হরিণের ঘুমকে ‘নিরপরাধ’ বলেছেন।

error: Content is protected !!