নানা রঙের দিন
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
২।‘নানা রঙের দিন’ নাটক অবলম্বনে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ কর।
উতর- অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নানা রঙের দিন’ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রটি হল পেশাদারী নাট্যমঞ্চের প্রাক্তন অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। নাটকের শুরুতে তাঁর স্বগতোক্তি এবং পরে কালীনাথ সেনের সঙ্গে কথোপকথনে তাঁর চরিত্রটি বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে।
রজনীবাবুর চরিত্রের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হল তাঁর থিয়েটার-প্রীতি। পুলিশ ইনসপেক্টরের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি থিয়েটারের জগতে প্রবেশ করেহিলেন। এমনকি থিয়েটারকে ভালোবেসে নিজের প্রেমকে বিসর্জন দিতে তিনি পিছুপা হননি।
অভিনেতা হিসেবেও তিনি অত্যন্ত সফল। একসময় যখন বয়স কম ছিল তখন তাঁর অভিনয় সাধারণ মানুষ থেকে সংবাদপত্র- সকলের প্রশংসা পেয়েছিল। যে মেয়েটি তাঁর প্রেমে পড়েছিল সেও তাঁর অভিনয়েই মুগ্ধ হয়েছিল। এমনকি আটষট্টি বছর বয়সে দিলদারের ভুমিকায় অভিনয় করেও তিনি সাতবার ক্ল্যাপ পেয়েছেন।
শেকসপিয়ারের নাটক থেকে যেভাবে সংলাপ বলে গেছেন তা থেকে তাঁর নাট্যপ্রতিভার উৎকর্ষতা আন্দাজ করা যেতে পারে।
রামব্রিজকে তিন টাকা বকশিশ দেওয়ার ঘটনাটি তাঁর মহানুভবতার পরিচায়ক। তেমনি কালীনাথ সেনের সঙ্গে তাঁর ব্যবহার যথেষ্ট ভদ্র ও মার্জিত।
সমগ্র নাটকে রজনীবাবু চরিত্রটির যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ার মতো তা হল তাঁর বিগত যৌবনের জন্য বিলাপ ও নিঃসঙ্গতাজনিত হাহাকার। কিন্তু নাটকের শেষে তিনিই কালীনাথকে বুঝিয়েছেন- “হ্যাঁ কালীনাথ, আমাদের দিন ফুরিয়েছে’। কালের অমোঘ নিয়মকে স্বীকার করার মধ্য দিয়ে চরিত্রটি মহত্তর স্তরে উন্নীত হয়েছে।