কে বাঁচায় কে বাঁচে
দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্য ছোটগল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’| WBCHSE class 12 (HS) Bengali [A] short story Ke Banchay Ke Banche by Manik Bandyopadhyay.
প্রশ্ন- “মৃত্যঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয়।”- মৃত্যুঞ্জয় কে? তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন? ১+৪ (উঃ মাঃ ২০১৫)
উত্তরঃ মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ গল্পের প্রধান চরিত্র হল মৃত্যুঞ্জয়। লেখকের কথায়, সে ছিল ‘মানবসভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস’।
মৃত্যুঞ্জয় তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। সে একটি অফিসে চাকরি করত। একদিন অফিস যাওয়ার পথে একটি অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিল। তারপর থেকে তাঁর মনোজগতে এমন পরিবর্তন এসেছিল যে দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষদের জন্য একবেলার খাবার বিলি করে দিত। তারপর মাইনের সমস্ত টাকাটা রিলিফ ফান্ডে দান করে দেয়। এরপর যত দিন যায় সেও ক্রমশ পাল্টে যেতে থাকে। অফিস থেকে আগেই বেরিয়ে যেত এবং সময়মতো বাড়িও ফিরত না। শহরের ফুটপাতে এবং বিভিন্ন লঙ্গরখানায় নিরন্ন মানুষের সঙ্গে সে সময় কাটাত।
দুর্ভিক্ষ-পীড়িত মানুষদের মুখে অন্ন জোগানোর জন্য সে নিজের এবং পরিবারের প্রতি যে অবহেলা শুরু করেছিল, তারই পরিণতিতে তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠেছিল। তার বাড়িতে তখন-
১) টুনুর মা অর্থাৎ মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রী শয্যাশায়ী। তার স্বাস্থ্য ভালো ছিল না অথচ এতদিন ধরে নিজের খাবার অপরকে বিলি করে এসেছে। তার ফলেই এখন সে শয্যাশায়ী।
২) সে বাড়ির লোকেদের বারবার স্বামীর খোঁজে পাঠিয়ে দেয়। তারা কেউ মৃত্যুঞ্জয়ের খোঁজ পায় না। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়িতে এসে তাকে মিথ্যে সান্ত্বনা দেয়।
৩) মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলেমেয়েগুলি অবহেলায়, অনাদরে, ক্ষুধার জ্বালায় চেঁচিয়ে কাঁদে।
এইভাবে, দেশের লোকের ভালো করার নেশায় মৃত্যুঞ্জয় যে পাগলামি শুরু করেছিল তার ফলেই তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠেছিল।