বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার অবদান।
উত্তর- বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার (১৮৯৩-১৯৫৬) নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণযোগ্য। ১৯০৯ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর ঢাকা কলেজ থেকে আই এস সি, ১৯১৩ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি এস সি এবং ১৯১৫ সালে ফলিত গণিতে এম এস সি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে গবেষণা করে ডি এসসি এবং পি আর এস ডিগ্রি লাভ করেন।তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল রিলেটিভিটি, প্রেশার অফ লাইট এবং আস্ট্রোফিজিক্স। তাঁর গবেষণাপত্র দুটি হল ‘অন ম্যাক্সওয়েল স্ট্রেসেস এবং’অন আয়নাইজেশন ইন দি সোলার ক্রোমোস্ফিয়ার’। তাঁর আবিষ্কার জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় অনেক নূতন পথের সন্ধান দেয়।
১৯১৮ সালে বিজ্ঞান কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে তাঁর শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয়। তিনি ১৯২০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খয়রা অধ্যাপক’ হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯২৩ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৩৮ সালে কলকাতায় ফিরে গিয়ে বিজ্ঞান কলেজের পালিত অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এছাড়া বিজ্ঞানচর্চার জন্য গড়ে তুলেন Institute of Nuclear Physics(১৯৪৮ ) এবং National Institute of Science প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি দামোদর উপত্যকা সংস্কার নিয়েও ভাবিত ছিলেন। ভারতীয় নদীগুলির বন্যাসমস্যার মোকাবিলার জন্যও তিনি গবেষণা করেছেন। ১৯৫২ সালে গঠিত জাতীয় বর্ষপঞ্জী সংস্কার কমিটির তিনি অন্যতম সদস্য ছিলেন। বিজ্ঞান বিষয়ক তাঁর পুস্তকগুলি হল Treatise on Heat, Treatise on Modern Physics, The Principle of Relativity প্রভৃতি।