আমি কি তাকাব আকাশের দিকে…

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে/ বিধির বিচার চেয়ে”- কোন প্রসঙ্গে এই প্রশ্ন করা হয়েছে? প্রশ্নটির তাৎপর্য কি?

উত্তর- মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি সামাজিক অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে রচিত একটি অনবদ্য কবিতা। বিপদ যখন ঘনিয়ে আসে তখন সমজের লেখক ও বুদ্ধিজীবীরা কী ভূমিকা নিতে পারেন এবং সেই একেই প্রেক্ষাপটে কবির কি অবস্থান তা তিনি এই কবিতার স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। যদি বাড়ি থেকে নিখোঁজ কোন যুবতির ছিন্নভিন্ন শরীরের সন্ধান পাওয়া যায় গভীর জঙ্গলে তখন কবি নিশ্চয় ঈশ্বরের দোহায় পাড়বেন না এই প্রসঙ্গে কবির এই উক্তি।

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে

গীতার বানিতে রয়েছে যে, মানুষ নিমিত্ত মাত্র । এর অর্থ আমরা স্বজ্ঞানে অথবা অজ্ঞানে যা কিছু করি তার পিছনে ঈশ্বরের ভূমিকা রয়েছে। গীতার এই কথাটির অর্থ গভীরতর কিন্তু দৈনন্দিন জিবনে সকল কাজেই ঈশ্বরের দোহায় দেওয়া একটি কু-অভ্যাসের মতো। যদি কোন অনিষ্ট ঘতে থাকে তবে ঈশ্বর তার বিচার করবেন আর নিজে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলেও চলবে—এমনটা ভাবা ঈশ্বরানুগত্য নয়। নিজের কাপুরুষতা দুর্বলতাকে ঢাকানোর জন্য মানুষ অনেক সময় ঈশ্বরের দোহায় দেয়। একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে কবি এই ভাবনার বিরুদ্ধে । কবি স্পষ্ট বলেছেন ‘আমি তা পারি না’ । আসলে কবি চান যে সমাজবদ্ধ মানুষেরা অতাচারীর অপকর্মের প্রতিবাদ নিজেরাই করুক।

error: Content is protected !!