ক্রন্দনরতা জননীর পাশে
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
২। ‘আমি তা পারিনা’- কবি কী পারেন না? এই প্রসঙ্গে কবি কী কী পারার কথা বলেছেন?
উত্তর- কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতার শেষ স্তবকে কবি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন- ‘আমি তা পারিনা’। কবি যা পারেন না তা হল চোখের সামনে অন্যায় হচ্ছে দেখে তিনি নিরুত্তাপ থাকতে পারেন না। এইরকম বিপন্ন সময়ে তিনি অযথা ঈশ্বরভক্তি দেখিয়ে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতেও পারেন না।
ইতিহাস সাক্ষ্যি আছে- ‘ Pen is mightier than sword’ অর্থাৎ তরবারির থেকে কলম বেশি শক্তিশালী। যথার্থ কলমের খোঁচায় স্বৈরাচারী রাজার সিংহাসনের ভিত নড়ে যেতে পারে। আলোচ্য অংশে কবির প্রধান হাতিয়ার সেই লেখনী।
ব্যক্তিপরিচয়ে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত একজন সাংবাদিক এবং একইসঙ্গে তিনি একজন সমাজদরদী কবি। সমাজের সত্যকে লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরাই তাঁর দায়িত্ব এবং কর্তব্য। তাই চোখের সামনে অন্যায়-অবিচার হচ্ছে দেখলে তাঁর লেখার মাধ্যমেই তিনি প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। কবি বলেছেন- “যা পারি কেবল/ সে-ই কবিতায় জাগে”।
ক্রন্দনরতা জননীকে দেখে, নিহত সহনাগরিককে দেখে কিম্বা লাঞ্ছিতা কিশোরীর ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ দেখে কবি যথার্থই ক্ষুব্ধ। তিল তিল করে জমানো ক্ষোভ একসময় বারুদে পরিনত হয়। সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে তথা সরকারের পেষণের বিরুদ্ধে কবির প্রতিবাদের ভাষা কবিতার মাধ্যমে বাণীরূপ লাভ করে।