একাদশ শ্রেণী
নাটক গুরু
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- “উনি গেলে তোমাদের অচলায়তনের পাথরগুলো সুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে, পুঁথিগুলোর মধ্যে বাঁশি বাজবে”- কার সম্পর্কে বলা হয়েছে? কথাটির তাৎপর্য কী? ১+৪
উত্তর- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গুরু’ নাটকে প্রথম যূনক তাদের দাদাঠাকুর সম্পর্কে পঞ্চককে একথা বলেছে।
অচলায়তন একটি বিদ্যায়তন। অচলায়তনিকরা জ্ঞানমার্গে ঈশ্বরের সাধনা করে। তাদের জীবনে হাজাররকমের সংস্কার। সবসময় মন্ত্র পাঠ করে, আচার পালন করে তারা নিজেদের শুদ্ধ রাখার চেষ্টা করে। নিজেদের পবিত্রতা রক্ষার জন্য তারা নিজেদেরকে ক্ষুদ্র গণ্ডীতে বদ্ধ করে রেখেছে। কঠোর অনুশাসনের মধ্যে জীবন যাপন করাকেই তারা জীবনের সার্থকতা বলে মনে করে। আর অচলায়তনের পুঁথিগুলি তাদের জীবনের পথপ্রদর্শক। সংস্কারের বেড়াজালে অচলায়তন এবং তার আবাসিকদের জীবন অচল হয়ে পড়েছে।
এসবের বিপরীতপ্রান্তে রয়েছেন যুনকদের দাদাঠাকুর। তিনি কর্মের প্রতীক, তিনি মুক্ত প্রাণের দিশারী। সচলতাই তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র। সঙ্গীত আর নৃত্যে যে জীবনের প্রকাশ- দাদাঠাকুর সেই জীবনপথের অগ্রপথিক। তাই পঞ্চক যখন দাদাঠাকুরকে অচলায়তনে নিয়ে যাবার কথা বলে তখন প্রথম যূনক বলেছিল – “উনি গেলে অচলায়তনের পাথরগুলো সুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে, পুঁথিগুলোর মধ্যে বাঁশি বাজবে”। অর্থাৎ যেসকল জীর্ণ সংস্কার একটি বিদ্যায়তনকে অচলায়তনে পরিণত করেছিল, দাদাঠাকুর গেলে সেসবের অবসান হবে- অচলায়তনের মুক্তি ঘটবে।