রূপক-সাংকেতিক নাটক হিসেবে গুরু

শ্রেণী- একাদশ

নাটক- গুরু

বড় প্রশ্ন (মান -৫)

৪) গুরু নাটকটি রূপক-সাংকেতিক নাটক হিসেবে কতখানি সার্থক।

উত্তরঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু’ নাটকটি ‘অচলায়তন’ নাটকের ক্ষুদ্র সংস্করণ। রবীন্দ্রনাথের বেশিরভাগ নাটক রূপক-সাংকেতিক। এই ধরণের নাটকের আড়ালে কিছু বাস্তব সমস্যা তুলে ধরা হয়। আবার স্থান বা গোত্রনাম, ঘটনা ইত্যাদিতে সংকেত ব্যবহার করা হয়। আলোচ্য নাটকে রূপক-সাংকেতিক নাটকের কিছু বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। যথা-

নাটকের প্রাধান দ্বন্দটি হলো– প্রথার সঙ্গে প্রাণের বিরোধ। প্রথা, আচার, ধর্মকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অচলায়তনে পরিনত হয়েছিল। প্রথার স্থান মানুষের জীবনের উপরে নয়। মানুষ যে প্রথা তৈরি করে সেগুলিকে যদি জীবনের উপরে স্থান দেওয়া হয় তবে অনর্থ ঘটে। এই সত্যটি তুলে ধরাই নাট্যকারের উদ্দেশ্য ছিল।

নাট্য ঘটনাকে যথাযথ করার জন্য বেশ কিছু সাংকেতের ব্যাবহার করা হয়েছে। নাটকের কাহিনী যে শিক্ষালয়কে নিয়ে তাঁর নাম অচলায়তন। এই অচলায়তন নামটি সাংকেতিক। যে রাজ্যে অচলায়তন রয়েছে সেই রাজ্যের নাম স্থবিরপত্তন, রাজ্যবাসীদের নাম স্থবিরক এবং রাজার নাম মন্থরগুপ্ত। স্থবির, মন্থর তাঁর অচল প্রায় সমার্থক। এই নাম গুলি থেকে বোঝাচ্ছে যে নাটকের কাহিনীতে বর্ণিত মানুষগুলি চলমান নয়- মৃতের মত স্থির। এছাড়াও যুনক, দর্ভক প্রভৃতি জাতি-নামগুলি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

পরিশেষে বলা যায় যে কাহিনী, চরিত্রনাম প্রভৃতি বিচারে গুরু নাটকটি একটি সার্থক রূপক সাংকেতিক নাটক।

 

error: Content is protected !!