গুরু নাটক
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বড় প্রশ্ন (মান- ৫)
২) গুরু নাটকের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা কর।
উত্তরঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অচলায়তন’ নাটকের অভিনয়যোগ্য সংস্করণের নাম ‘গুরু’। এখন প্রশ্ন হল, এই নাম পরিবর্তনের কারন কী? ‘গুরু’ নামটাই বা কতখানি সার্থক?
সাহিত্যে নামকরণের ভিত্তি তিনটি- প্রধান ঘটনা, প্রধান চরিত্র, অথবা ব্যঞ্জনা। অচলায়তনের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ করেছিলেন আর গুরুতে নামকরণ হয়েছে প্রধান চরিত্র কেন্দ্রিক।
গুরু নাটকের প্রধান চরিত্র গুরু। অচলায়তনের অধিবাসীদের কাছে তিনি গুরু। নাটকের শুরুতেই তাঁর আসার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। গুরুকে নিয়ে অচলায়তনিক দের মধ্যে নানারকমের ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। মহাপঞ্চক প্রভৃতি মনে করেছে যে গুরু খুশি হয়েই আসছেন আর পঞ্চক মনে করেছে গুরু আসছেন মুক্তি দেওয়ার জন্য। একেই সঙ্গে আচার্য মনে করেছেন যে পাপের বোঝা পূর্ণ হয়েছে বলেই গুরু আসছেন। শেষ পর্যন্ত গুরু এসেছেন। সমস্ত জীর্ণ সংস্কার ভেদ করে গুরু অচলায়তনকে মুক্ত করেছেন। অর্থাৎ, গুরুর আগমনই এই নাটকের মূল সুর। সেদিক থেকে বিচার করলে নামকরণটি সার্থক হয়েছে
আবার, নাটকের পটভূমি বিচার করলে দেখা যাবে, গুরু নাটকের তিনটি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছে- অচলায়তনের আবাসিকগণ, যুনক ও দর্ভক সম্প্রদায়। যিনি অচলায়তনের গুরু, তিনি যুনকদের দাদাঠাকুর এবং তিনিই দর্ভকদের গোঁসাই ঠাকুর। সমস্ত নাটকের প্রাণকেন্দ্র তিনি। সুতরাং একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে আলোচ্য নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র গুরু। তাই এই নামকরণ যথাযথ হয়েছে।