ধ্বনিতত্ত্ব
ভাষাবিজ্ঞান (দ্বাদশ শ্রেণী)
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- দু’টি করে উদাহরণ সহ গুচ্ছধ্বনি এবং যুক্তধ্বনির পরিচয় দাও।
উত্তর- ধ্বনিতত্ত্বের অন্যতম কাজ হল ধ্বনিমূলের অবস্থান এবং ধ্বনির সমাবেশ নিয়ে আলোচনা করা। ধ্বনি সমাবেশের অন্তর্গত দুটি বিষয় হল- গুছধ্বনি এবং যুক্তধ্বনি।
গুচ্ছধ্বনি– পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ব্যাঞ্জনধ্বনি যে যুগ্মধ্বনি তৈরি করে তাকে গুচ্ছধ্বনি বলে। অর্থাৎ, যে দুটি ব্যাঞ্জনধ্বনির মাঝখানে কোন স্বরধ্বনি নেই সেই ব্যঞ্জন দুটির যুগ্মধনিকে গুচ্ছধনি বলে।
গুচ্ছধ্বনির দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হল এতে দলসীমা বর্তমান থাকে অর্থাৎ গুচ্ছধ্বনির অন্তর্গত ধ্বনিগুলি পৃথক দল।
বাংলায় দুটি ব্যঞ্জন ধ্বনিতে তৈরি ধ্বনিগুচ্ছের সংখ্যা-২০০, তিনটি ব্যাঞ্জনধ্বনি দিয়ে তৈরি গুচ্ছধ্বনির সংখ্যা-৪ এবং চারটি ব্যঞ্জনধ্বনি দিয়ে তৈরি গুচ্ছধ্বনির সংখ্যা-১ টি।
ধ্বনিগুচ্ছের উদাহরন–
অজন্তা= অ+জ+অ+ন+ত+আ (এখানে ‘ন্ত’ হল গুচ্ছধ্বনি)
শ্রদ্ধা=শ্+র্+অ+দ্+ধ+আ (এখানে ‘দ্ধ’ হল গুচ্ছধ্বনি)
যুক্তধ্বনি– যে ব্যঞ্জনধ্বনির সমাবেশগুলি শব্দের আদিতে উচ্চারিত হতে পারে সেগুলিকে যুক্তধ্বনি বলে। এখানে দলসীমা থাকে না।
দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির সমাবেশে যুক্তধ্বনি তৈরি হলে প্রথম ব্যঞ্জনধ্বনিটি [স] অথবা দ্বিতীয় ব্যঞ্জনটি [র] বা [ল] হবে। বাংলায় এই রকম ২৪ টি যুক্তধ্বনি রয়েছে। এছাড়া ইংরাজি থেকে আমদানি করা ১৪ টি যুক্তধ্বনি রয়েছে। তিনটি ব্যঞ্জনধ্বনি দিয়ে তৈরি যুক্ত ধ্বনির সংখ্যা- ২টি।
যুক্তধ্বনির উদাহরন-
স্নান=স্+ন্+আ+ন্ (এখানে ‘স্ন’ হল যুক্ত ধ্বনি)
ম্লান=ম্+ল+আ+ন্ (এখানে ‘ম্ল’ হল যুক্তধ্বনি)।