গারো পাহাড়ের নীচে- জীবনযাত্রা

আমার বাংলা

গারো পাহাড়ের নিচে

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন-‘গারো পাহাড়ের নিচে’ যারা বসবাস করে তাদের জীবনযাত্রার পরিচয় দাও।

উত্তর- সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে গারো পাহাড়ের নিচে বসবাসকারী মানুষদের কথা উঠে এসেছে। হাজং-গারো-ডালু-মর্গান প্রভৃতি নানা জাতের মানুষ সেখানে বসবাস করে। ভিন্ন জাত হলেও তাদের জীবনধারণের প্রকৃতি প্রায় একই রকমের। এদের মুখেচোখে পাহাড়ি ছাপ। গারোদের ভাষা আলাদা কিন্তু হাজং-ডালুদের ভাষা বাংলা, যদিও আমাদের ভাষার সঙ্গে এদের ভাষার কিছু উচ্চারণের পার্থক্য আছে।

গারো পাহাড়ের নিচে
গারো পাহাড়ের নীচে

গারোদের বসতবাড়িগুলির বিশেষত্ব রয়েছে। তাদের ঘরগুলি মাচার উপর। বন্যজন্তুর ভয়ে মানুষ-গবাদিপশু সবাই এক মাচার উপর থাকে, সেখানেই আবার রান্নাবান্না হয়।

এদের সকলের প্রধান জীবিকা চাষবাস। হালবলদ নিয়েই তারা চাষ আবাদ করে। তবে হাজংরাই চাষের ব্যাপারে সবচেয়ে দক্ষ। এই অঞ্চলে তারাই নাকি প্রথমে এসেছিল। চাষবাসে তাদের জুড়ি নেই। তাই পাহাড়ি গারোরা এদের নাম দিয়েছে হাজং- অর্থাৎ চাষের পোকা।  ছোটোখাটো কোনো টিলায় উঠে নিচের দিকে তাকালে মনে হবে পৃথিবীটা যেন সবুজ, যতদুর দেখা যায় শুধু ধান আর ধান।

এত ফসল আর এত প্রাচুর্য থাকা স্বত্বেও এইসব মানুষদের জীবনে সুখ নেই। ধানকাটার সময় মেয়ে-পুরুষ সবাই কাস্তে নিয়ে মাঠে যায়। ছেলে-বুড়ো সকলে মিলে মনের আনন্দে মাঠের ধান ঘরে নিয়ে আসে। আর তারপরেই আসে জমিদারের পাইক-বরকন্দাজ। জমিদারের পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে যেটুকু অবশিষ্ট থাকে তা দিয়ে সারাবছর খাওয়া চলেনা। তারা মনের দুঃখে গান ধরে- “খালি পেটে তাই লেগেছে ধাঁধা”। (শব্দসংখ্যা- ১৮০)

error: Content is protected !!