দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা
জীবনানন্দ দাশের শিকার
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- ‘এসেছে সে ভােরের আলােয় নেমে’ – সেই ভােরের বর্ণনা দাও। ‘সে’ ভােরের আলােয় নেমে আসার পর কী কী ঘটল, লেখাে। ৩+২ (২০২০)
উত্তর- জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতায় একটি সুন্দর বাদামি হরিণ ভোরের আলোয় নেমে এসেছিল। সে সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখে এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল।
ভোরের আলোয় নেমে এসে সেই হরিণটি প্রথমে কচি বাতাবিলেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস খেতে শুরু করে। তারপর অনিদ্রাজনিত ক্লান্তি দূর করার জন্য সে নদীর তীক্ষ্ণ-শীতল ঢেউয়ে নামে। নিজের দেহমনে ‘ভোরের রৌদ্রের মতো একটা বিস্তীর্ণ উল্লাস পাবার জন্য’ সে হিমশীতল জলে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল।
আর সে এতকিছু করেছিল ‘সাহসে সাধে সৌন্দর্যে হরিণীর প্রহরীকে চমক লাগিয়ে দেওয়ার জন্য’। কিন্তু হরিণের ইচ্ছে পূরণ হয়নি। চোরা শিকারিদের অব্যর্থ নিশানায় হরিণটির স্বপ্নে ইতি টানা যায়।
‘একটা অদ্ভুত শব্দ’ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে নদীর জল মচকা ফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে যায়। জ্যান্ত হরিণ ততক্ষণে মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়ে গেছে। আগুন জ্বালানো হয় এবং ‘উষ্ণ লাল হরিণের মাংস’ প্রস্তুত হয়। আর এইভাবে, একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ভোরের আলোয় নেমে এসে সুন্দর বাদামি হরিণটি মানুষের লালসার শিকার হয়েছিল।