এই স্বভাবই শেষ জীবনে..

গালিলিও

বড় প্রশ্ন (মান ৫)

প্রশ্ন- ” এই স্বভাবই শেষ জীবনে তাঁর অশেষ দুঃখের কারণ হলো”- কার কোন স্বভাবের কথা বলা হয়েছে? সেই স্বভাব তার শেষ জীবনে অশেষ দুঃখের কারণ হলো কীভাবে? ২+৩

উত্তর- সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ থেকে জানা যায় যে বাল্যকাল থেকেই গালিলিও সবকিছু যুক্তি সহকারে বিচার করে নিতেন। তখনকার দিনে প্রচলিত বিশ্বাস, ধ্যানধারণা কোনোকিছুই তিনি চোখ বন্ধ করে মেনে নিতে পারতেন না। তাঁর এই যুক্তিবাদী স্বভাবই তাঁর শেষ জীবনে ‘অশেষ দুঃখের কারণ’ হয়েছিল।

গালিলিও
গালিলিও

গালিলিও যখন জন্মেছিলেন তখন ইউরোপে আক্ষরিক অর্থেই মধ্যযুগ; তখনও বিজ্ঞানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পুরাতন ধর্মতন্ত্র; কোপার্নিকাসের মতবাদ তখনো স্বীকৃতি পায়নি বরং টলেমি নির্দেশিত পথেই চলত গ্রহ-নক্ষত্রের পর্যবেক্ষণ। গালিলিও নিজের তৈরি দূরবীন নিয়ে যেসকল জিনিস আবিষ্কার করলেন তার ফলে কোপার্নিকাসের বিশ্ববিন্যাসের তত্ত্ব তাঁর কাছে অভ্রান্ত মনে হল।

তবে নিজে জানলেই তো হবে না, সকলকেই জানাতে হবে সেসব কথা।তিনি তাঁর আবিষ্কারের কথা জনগনের মধ্যে প্রচার করার উদ্যেশ্যে বই লিখতে শুরু করলেন। আর এতেই তিনি প্রাচীনপন্থীদের বিরাগভাজন হয়ে গেলেন।

সনাতনপন্থীরা তাঁর বিজ্ঞানসাধনাকে ‘ধর্মবিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এমনি ষড়যন্ত্রের জাল রচনা করেছিল যে জীবনের শেষ বছরগুলি তাঁর কাছে নারকীয় হয়ে উঠেছিল।

গালিলিও যদি সেদিন যুক্তি-তর্কের পরোয়া না করে মধ্যযুগীয় বিশ্বাসের কাছে মাথা নত করে নিতেন তাহলে হয়তো তাঁর শেষ জীবনে এতো বিপর্যয় নেমে আসতো না।

error: Content is protected !!