দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
নাটক- বিভাব
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- ‘এই পড়ে বুকে ভরসা এল।” – কী পড়ে বক্তা বুকে ভরসা পেয়েছিলেন? প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ‘ভরসা’ পাওয়ার তাৎপর্য আলোচনা কর। ২+৩
উত্তর- শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকের আলোচ্য অংশে রাশিয়ার খ্যাতনামা চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইনের একটি লেখা পড়ে নাট্যকার ভরসা পেয়েছিলেন।
আলোচ্য নাটকে দেখা যায় নাটক শুরু হতেই নাট্যকার সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে গ্রুপ থিয়েটারের আর্থিক অনটনের দিকটি। নাট্যকার দর্শকদের জানিয়েছেন যে, নাট্য-সরঞ্জাম বাদ দিয়ে যদি অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে কাজ চালানো যেত তাহলে ব্যয়ভার অনেকটা কমে যেত। তিনি নিজের ভাবনার সমর্থনে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন।
একটি পুরোনো বাংলা নাটকে এই অঙ্গভঙ্গিমার নিদর্শন পাওয়া গেল। উড়ে দেশের এক যাত্রাপালাতে এবং একটি মারাঠি তামাশায় নাট্যকার একইরকম অঙ্গভঙ্গির ব্যবহার দেখলেন। অর্থাৎ, নাট্যকার যেরকম নাটক করার কথা ভাবছেন, তেমন নাটক আগেও হত এবং এখনো হয়। সুতরাং বাংলা নাটকেও এই রীতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
কিন্তু কলকাতার শিক্ষিত সমাজ সেই নাটক মেনে নেবে কি না এই দুশ্চিন্তায় তিনি কার্যত ‘চুপসে’ গেলেন। শিক্ষিত বাঙালিরা নতুন কোনো কিছু গ্রহণ করতে পারে না, এমনকি রবি ঠাকুরকেও মেনে নেয়নি। নাট্যকারের মতে, যদি কোনো সাহেব এবিষয়ে শংসাপত্র দিতেন তাহলে বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা মেনে নিতেন। এই সময়ই তিনি আইজেনস্টাইনের লেখাটি পড়েছিলেন।
আইজেনস্টাইন সাহেব জাপানের কাবুকি থিয়েটারের খুব প্রশংসা করেছিলেন এবং এই নাটকেও নাকি অঙ্গভঙ্গির বহুল ব্যবহার ছিল। তাই তাঁর লেখা পড়ে নাট্যকার ভরসা পেয়েছিলেন।