ধ্বনিমূল ও সহধ্বনি সনাক্তকরণ

ধ্বনিতত্ত্ব

ভাষাবিজ্ঞান (দ্বাদশ শ্রেণী)

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- কোনো ধ্বনি ধ্বনিমূল না সহধ্বনি কীভাবে সনাক্ত করবে।

উত্তর- ধ্বনিতত্ত্বের প্রধান কাজ হল কোনো ভাষায় ধ্বনিমূল ও সহধনিগুলিকে সনাক্ত করা। একটি ধ্বনি ধ্বনিমূল নাকি সহধ্বনি তা নির্ণয় করার বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে; বেশ কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ধ্বনিমূল ও সহধ্বনি সনাক্ত করা সম্ভব।

ধ্বনিতত্ত্ব
ধ্বনিতত্ত্ব

প্রথমত- একটি ভাষার অভিধানে আছে এমন বেশ কিছু ন্যূনতম শব্দজোড় নির্বাচন করতে হয়। ন্যূনতম শব্দজোড় হল উচ্চারণে মিল আছে কিন্তু সামান্য পার্থক্য আছে এমন এক জোড়া শব্দ। যেমন- নরম-গরম, জাল-কাল ইত্যাদি। নুন্যতম শব্দজোড়ের যে ধ্বনিটির জন্য দুটি শব্দের অর্থপার্থক্য হয় সেটিকে পৃথক ধ্বনিমূল বলা যেতে পারে। সুতরাং উপরের নুন্যতম শব্দজোড়দুটি থেকে বলা যেতে পারে বাংলা ভাষায় /ন/, /গ/, /জ/, /ক/ এগুলি এক একটি ধ্বনিমূল।

দ্বিতীয়ত- অনেক সময় দেখা যায় একটি ধ্বনির একাধিক উচ্চারণবৈচিত্র্য রয়েছে। যেমন- বাংলা /ল/ ধ্বনিমূলটির তিন রকমের উচ্চারণবৈচিত্র্য রয়েছে যেগুলি পাওয়া যায় যথাক্রমে –‘লঙ্কা’, ‘উল্টো’ এবং ‘আলতা’ শব্দ উচ্চারণ করে। এই তিনটি /ল/ একে অপরের জায়গায় উচ্চারিত হতে পারে না। কোন ধ্বনির নির্দিষ্ট প্রতিবেশে এই উচ্চারণকে পরিপুরক অবস্থান বলে। যে দুটি ধ্বনির মধ্যে পরিপুরক অবস্থান থাকে সেগুলিকে একই ধ্বনির সহধ্বনি বলা হয়।

তৃতীয়ত- উচ্চারণ বিকৃতির জন্য একই ধ্বনি দু’রকম উচ্চারিত হতে পারে। যেমন-‘গাঢ়’ এই শব্দটি বেশিরভাগ মানুষ উচ্চারণ করে ‘গাড়’। কিন্তু ‘গাঢ়’ আর ‘গাড়’ এই দুটি ন্যূনতম শব্দজোড় নয়। এইরূপ শব্দজোড়ে প্রাপ্ত ধ্বনিগুলিকে ধ্বনিতত্ত্বের আলোচনায় মুক্তবৈচিত্র্য বলা হয়। এই মুক্তবৈচিত্র্যের ধ্বনিগুলিও সহধ্বনি রূপে বিবেচিত হয়।

error: Content is protected !!